টীকা লেখো: মিউনিখ চুক্তি

টীকা লেখো: মিউনিখ চুক্তি
টীকা লেখো: মিউনিখ চুক্তি।

ভূমিকা

অস্ট্রিয়া দখলের পর হিটলারের আগ্রাসী নীতির লক্ষ্যবস্তু হল চেকোশ্লোভাকিয়া। চেকোশ্লোভাকিয়ার সুদেতান অঞ্চলের (Sudetan) জার্মানগণ হিটলারের প্ররোচনায় জার্মানির সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। আত্মনিয়ন্ত্রণের দাবিকে সমর্থন করে হিটলার চেক সীমান্তে সেনা সমাবেশ করলেন। হিটলারের ফাঁদে পা মিলিয়ে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী চেম্বারলেন তোষণনীতি অনুসরণ করে হিটলারের সঙ্গে একটি বোঝাপড়ার চেষ্টা করেন। অবশেষে জার্মানির মিউনিখ শহরে হিটলার, চেম্বারলেন, দালাদিয়ের ও মুসোলিনির মধ্যে মিউনিখ চুক্তি (Munich Pact, সেপ্টেম্বর, ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দ) স্বাক্ষরিত হয়।

(১) ১ অক্টোবর থেকে ১০ অক্টোবরের মধ্যে সুদেতান জেলা থেকে চেক সেনা ও সরকারি কর্মচারীদের প্রত্যাহার করে নিতে হবে (২) এই সময়সীমার মধ্যে জার্মান বাহিনী ধাপে ধাপে সুদেতান অঞ্চল দখল নেবে। (৩) ব্রিটেন ফ্রান্স ও ইটালি সুদেতান অঞ্চল ও অবশিষ্ট চেকোশ্লোভাকিয়ার মধ্যে সীমান্ত শীঘ্রই নির্দেশ করে দেবে। (৪) ব্রিটেন ও ফ্রান্স অবশিষ্ট চেকোশ্লোভাকিয়ার স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা রক্ষার গ্যারান্টি দেবে।

গুরুত্ব

প্রাক্-দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের রাজনীতিতে মিউনিখ চুক্তির বেশ কয়েকটি গুরুত্ব ছিল, যেমন-

হিটলারের কূটনৈতিক সাফল্য :
আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিরোধ নয়, আপসের মাধ্যমেই হিটলারের সাম্রাজ্য সম্প্রসারণের দাবিকে ইংল্যান্ড-ফ্রান্স মেনে নিয়েছিল। হিটলার মনে করতে শুরু করে তাকে বাধাদানের ক্ষমতা ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের নেই। তিনি গোটা চেকোশ্লোভাকিয়া দখল করে নেন। এর চুক্তির দ্বারা রাশিয়া পশ্চিমি রাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতার নীতি ত্যাগ করে এবং রুশ-জার্মান অনাক্রমণ চুক্তির পথ প্রস্তুত হয়। একারণেই এই চুক্তি ছিল হিটলারের কূটনৈতিক সাফল্য।

চেকোশ্লোভাকিয়ার দুর্বলতা : জার্মানি সুদেতান অঞ্চলের প্রাকৃতিক সম্পদ ও উৎপাদন সংস্থাগুলি ব্যবহার করে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে শক্তিশালী হয়ে ওঠে।

রুশ-জার্মান-অনাক্রমণ চুক্তির প্রেক্ষাপট:
এই পরিস্থিতিতে রাশিয়া জার্মানির সঙ্গে বোঝাপড়ায় আসার সিদ্ধান্ত নেয়। চেকোশ্লোভাকিয়ায় হিটলারের নিয়ন্ত্রণ কায়েম হওয়ায় সোভিয়েত রাশিয়ার ধারণা হল ব্রিটেন ও ফ্রান্স জার্মানিকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ঠেলে দিচ্ছে।

Leave a Comment