টীকা লেখো: স্ট্যালিনগ্রাডের লড়াই

টীকা লেখো: স্ট্যালিনগ্রাডের লড়াই
টীকা লেখো: স্ট্যালিনগ্রাডের লড়াই।
রুশ বাহিনী ও জনগণের অসম সাহসিকতার নিদর্শন হিসেবে স্ট্যালিনগ্রাডের যুদ্ধ আজও স্মরণীয় হয়ে আছে। ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে লেনিনগ্রাড অবরোধ মুক্ত হলে শুরু হয় ঐতিহাসিক স্ট্যালিনগ্রাডের লড়াই (১৭ জুলাই ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দ-২ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দ)।

রাশিয়া আক্রমণ

২২ জুন ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দে নাতসি বাহিনী তিন ভাগে ভাগ হয়ে তিন দিক থেকেই রাশিয়ার ওপর সাঁড়াশি আক্রমণ চালায়। দক্ষিণ দিকে জার্মান বাহিনীর আক্রমণে স্ট্যালিনগ্রাড অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। জার্মান বাহিনী স্ট্যালিনগ্রাডের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলগুলি দখল করে নেয়।

রুশ প্রতিরোধ

রুশ বাহিনী স্ট্যালিনগ্রাড রক্ষার জন্য মরণপণ সংগ্রাম চালায়। প্রত্যেক বাড়ি থেকে রুশ নাগরিকরা গণ প্রতিরোধ চালাতে থাকে। এছাড়া রুশ বাহিনীর পোড়ামাড়ি নীতি, প্রবল শীত, খাদ্যের অভাব এবং রুশ সেনাপতি মার্শাল ঝুকভের গেরিলা আক্রমণে জার্মান নাতসি বাহিনী বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।

জার্মানির বিপর্যয়

মার্শাল ঝুকভের নেতৃত্বে রুশ সেনারা স্ট্যালিনগ্রাডের ১৪ ডিভিশন জার্মান বাহিনীর বিরুদ্ধে সাঁড়াশি আক্রমণ শুরু করে। শেষ পর্যন্ত মার্শল ঝুকভ জার্মান ১৪ ডিভিশন বাহিনীকে ঘিরে ফেলে। জার্মান সেনারা প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি স্বীকার করেও রুশ ব্যুহ ভেদ করতে ব্যর্থ হয়।

স্ট্যালিনগ্রাড লড়াই এর পরিণতি

স্ট্যালিনগ্রাডে জার্মান নাতসি বাহিনীর পতন ঘটে। রুশ আক্রমণে ৩,৩৮,০০০ জার্মান সেনার মধ্যে মাত্র ৮০ হাজার জীবিত ছিল। ৮০ হাজার সেনার এবং ১৬ জন জার্মান সেনাপতি রুশদের হাতে বন্দি হয়। স্ট্যালিনগ্রাডের লড়াই এ জয়ের পর রুশ বাহিনী জার্মানদের রাশিয়া থেকে ঠেলে বের করে দেয়।

জার্মানির আত্মসমর্পণ : ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে (জানুয়ারি) জার্মান সেনাপতি ভনপৌলাস রুশ সেনাপতি মার্শাল ঝুকভের কাছে আত্মসমর্পণ করে। শেষ জার্মান বাহিনী ২ ফেব্রুয়ারি আত্মসমর্পণ করে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইতিহাসে স্ট্যালিনগ্রাডের জনযুদ্ধ এক মহান দৃষ্টান্ত। এই যুদ্ধে হিটলারের সামরিক শক্তি হ্রাস পায় এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের গতি পরিবর্তিত হয়।

Leave a Comment