![]() |
তেল কূটনীতি বলতে কী বোঝো? কীভাবে ‘তেল কূটনীতি’ (Oil Diplomacy) উপসাগরীয় সংকটের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছিল সে সম্পর্কে বিশদে আলোচনা করো। |
তেল কূটনীতি
তেল বাণিজ্য থেকে প্রাপ্ত মুনাফার দ্বারা মার্কিন অর্থনীতিকে মজবুত করা ছিল আমেরিকার তেল কূটনীতির প্রধান লক্ষ্য।
তেল কূটনীতির বিভিন্ন পর্যায়
ব্রিটেন, রাশিয়া ও ইরানের চুক্তি : ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে ইরানে অ্যাংলো-ইরানিয়ান অয়েল কোম্পানি গঠিত হয়। বিদেশি সাহায্যে তেল উত্তোলনের লক্ষ্যে ব্রিটেন ও সোভিয়েতের সঙ্গে মিলিত হয়ে ইরান এক চুক্তিতে আবদ্ধ হয়।
আন্তর্জাতিক সমস্যা সৃষ্টি: রাশিয়ার তেল অধিকার স্থাপনের উদ্যোগের বিরুদ্ধে ব্রিটেন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরব হয় (১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দ)। ফলে তেল কূটনীতি এক আন্তর্জাতিক সমস্যায় রূপান্তরিত হয়।
তৈলখনির জাতীয়করণ: ব্রিটেন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তেলের অধিকারের প্রশ্নে রুশবিরোধী সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য ইরানের প্রধানমন্ত্রীকে প্ররোচিত করে। ইরানের সংসদ মজলিশ-এ এক আইন পাস করিয়ে তেলের খনিগুলিকে জাতীয়করণ করার ব্যবস্থা করা হয় (১৯৫১ খ্রিস্টাব্দের ২৪ এপ্রিল)।
সাদ্দাম হোসেনের ইবান আক্রমণ : মার্কিন সাহায্য নিয়ে ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন ইরান আক্রমণ করেন (১৯৮০ খ্রিস্টাব্দ, সেপ্টেম্বর)। এতে বহু মুসলিম (আরবের মুসলমান নয়) ও ইরানি সেনা মারা যায়।
উপসাগরীয় সংকট: মার্কিন তেল কোম্পানিগুলির স্বার্থরক্ষা এবং রাজনৈতিক আধিপত্য বজায় রাখার জন্য ইরাক, ইরান ও কুয়েতকে কেন্দ্র করে একটি সংকট ও যুদ্ধ দেখা দেয়, যার প্রধান শক্তি ছিল আমেরিকা। এটি উপসাগরীয় সংকট বা Gulf Crisis নামে পরিচিত। প্রধানত ইরাক-ইরান যুদ্ধ (১৯৮০-৮৮ খ্রিস্টাব্দ), প্রথম উপসাগরীয় যুদ্ধ (১৯৯০-৯১ খ্রিস্টাব্দ) এবং দ্বিতীয় উপসাগরীয় যুদ্ধ (২০০৩-০৬ খ্রিস্টাব্দ)-এর মধ্য দিয়ে উপসাগরীয় সংকটের বহিঃপ্রকাশ ঘটে।