নদীর ক্ষয়কার্য এবং বহনকার্যের ক্ষমতাকেই এক কথায় নদীর শক্তি বলা হয়। নদীর শক্তি যে বিষয়গুলির ওপর নির্ভরশীল সেগুলি হল –
ভূমির ঢাল
পৃথিবীতে বিভিন্ন ভূমিরূপের ঢাল ভিন্ন ভিন্ন প্রকৃতির। সাধারণত ভূমির ঢাল যত বেশি হয় নদীর শক্তি (ক্ষয় ও বহনকার্য) তত বেশি হবে। আবার, ভূমির ঢাল কমলে নদীর শক্তিও হ্রাস পায়। পার্বত্য অঞ্চলে ভূমিঢাল বেশি বলে এখানে নদীর শক্তিও যথেষ্ট বেশি।
নদীর জলের পরিমাণ
নদীতে জলের পরিমাণ যত বেশি হবে, ক্ষয় এবং বহনকারী শক্তি তত বাড়বে এবং জলের পরিমাণ কমলে নদীর ক্ষয় ও বহনকারী শক্তি কম হবে।
জলের বেগ
নদীর জলের বেগের সঙ্গে নদীর শক্তি সর্বদা সমানুপাতিক। জলের গতিবেগ বাড়লে নদীর ক্ষয় ও
বহনক্ষমতা যেমন বেড়ে যায় তেমন নদীর জলের বেগ কমলে নদীর ক্ষয় ও বহন প্রক্রিয়ার হার অনেক কমে যায়।
নদীবাহিত বোঝার পরিমাণ
নদীবাহিত বোঝার প্রকৃতি নদীর শক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করে। বিশেষ করে নদীবাহিত বোঝাগুলি ছোটো, হালকা এবং পরিমাণে কম হলে যেমন নদীর শক্তির মাত্রা হ্রাস পায় তেমনই বোঝাগুলি বড়ো, ভারী ও বেশি পরিমাণে হলে নদীর শক্তি বৃদ্ধি পায়।
শিলার প্রকৃতি
নদীর তলদেশের শিলা প্রকৃতিগতভাবে কঠিন হলে তা কম ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে নদীর বোঝার পরিমাণ হ্রাস করবে, যা পরোক্ষভাবে নদীর বহনক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে।
নদী উপত্যকার প্রকৃতি
সাধারণত নদী উপত্যকা অমসৃণ (Rough) থাকলে নদীর জলের সঙ্গে ঘর্ষণে নদীর গতি অনেকটা হ্রাস পায়, ফলে নদীশক্তির অপচয় ঘটে। মসৃণ নদী উপত্যকায় এর বিপরীত অবস্থার সৃষ্টি হয়।