![]() |
নয়া উপনিবেশবাদের বৈশিষ্ট্য লেখো |
নয়া উপনিবেশবাদ (Neo-Colonialism)
নয়া উপনিবেশবাদের বৈশিষ্ট্যসমূহ
অর্থনৈতিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা : সদ্যস্বাধীনতাপ্রাপ্ত রাষ্ট্রগুলির অর্থনৈতিক দুর্বলতার জন্যই নয়া উপনিবেশবাদের জন্ম হয়েছে। নয়া উপনিবেশবাদী রাষ্ট্রগুলি আর্থিক সাহায্যের পরিবর্তে নতুন রাষ্ট্রগুলির অর্থনৈতিক কাঠামো পরিকল্পনা, আমদানি-রফতানি, শুল্কের হার ইত্যাদির উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে।
অদৃশ্য অর্থনৈতিক শোষণ: নয়া উপনিবেশবাদের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল অদৃশ্য অর্থনৈতিক শোষণ। লোকচক্ষুর আড়ালে কোনো একটি দেশের সার্বভৌমত্ব ঔপনিবেশিক শক্তির নির্দেশে পরিচালিত হয়।
শাসনব্যবস্থায় প্রভাব বিস্তার: নয়া উপনিবেশবাদের অপর একটি বৈশিষ্ট্য হল সেই দেশের শাসনব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বলপ্রয়োগ করে অথবা নাশকতামূলক কার্যকলাপের দ্বারা তারা সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত রাষ্ট্রগুলিতে এমন এক ধরনের সরকার স্থাপন করতে উদ্যোগী হয়, যারা তাদের অনুগত থাকবে এবং তাদের অর্থনৈতিক স্বার্থের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করবে না।
শাসকগোষ্ঠীকে নিয়ন্ত্রণ: নয়া ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রগুলি অনুন্নত রাষ্ট্রের শাসকগোষ্ঠীকে প্রভাবিত করতে বিশেষভাবে যত্নবান হয়।
মুখোশে ঢাকা সাম্রাজ্যবাদ : বৈদেশিক ঋণ, অনুদান, সমরাস্ত্র সরবরাহ ইত্যাদি বিভিন্ন সাহায্যদানের মাধ্যমে সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলি অনুন্নত দেশগুলিকে সুকৌশলে নিজেদের অধীনস্থ করে রাখে। পন্ডিতরা একে মুখোশে ঢাকা সাম্রাজ্যবাদ বলেছেন।
বিনিয়োগ ক্ষেত্রের সম্প্রসারণ: নয়া উপনিবেশবাদের অপর বৈশিষ্ট্য হল বিনিয়োগ ক্ষেত্রের সম্প্রসারণ। এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলি স্বাধীন হওয়ার পরেও তাদের অর্থনীতিতে বিদেশি পুঁজির বিনিয়োগ অব্যাহত থাকে এবং তার ফলে সেইসব দেশের জাতীয় সম্পদের এক বৃহৎ অংশ বিদেশিদের নিয়ন্ত্রণাধীনেই থেকে যায়।
বাজার অর্থনীতি : উন্নয়নশীল দেশগুলির বাজার অর্থনীতির অসম প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার ক্ষমতা না থাকায় নয়া উপনিবেশবাদী রাষ্ট্রগুলি তাদের উপর অর্থনৈতিক আধিপত্য স্থাপন করেছে।
সামরিক জোট গঠন : নয়া ঔপনিবেশিক নীতিকে কার্যকর করার জন্য সামরিক জোট গঠন ও চুক্তির আশ্রয় নেওয়া হয়। ন্যাটো, সিয়াটো, সেন্টো ইত্যাদির প্রতিষ্ঠা এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য।