![]() |
পরমাণু অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার কারণ ও ফলাফল লেখো। |
পরমাণু অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার কারণসমূহ
প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী রূপদান: অনেক রাষ্ট্রনেতা মনে করেন, যুদ্ধই শান্তি প্রতিষ্ঠার একমাত্র উপায়। তবে তারা এটা উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হন যে, নিরস্ত্রীকরণের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা যাবে। তারা নিজ দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে অস্ত্র তৈরির কাজে বিপুল অর্থ ব্যয় করতে থাকেন।
পারস্পরিক অবিশ্বাস: নিরস্ত্রীকরণের উদ্যোগকে সফল করার জন্য বৃহৎ শক্তিগুলির মধ্যে পারস্পরিক বিশ্বাস ও ভরসার বিশেষ প্রয়োজন। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তাদের মধ্যে এই বিশ্বাসের অভাব পরিলক্ষিত হয়। ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে রাশিয়া গোপনে আণবিক বোমা বিস্ফোরণ ঘটালে আমেরিকার বিশ্বাসভঙ্গ হয়।
গুপ্ত কার্যকলাপ: নিরস্ত্রীকরণ বলতে সাধারণত অস্ত্রের পরিমাণ হ্রাস বা অস্ত্রের বিলুপ্তি বোঝানো হয়। কিন্তু অনেক দেশ গোপনে তার অস্ত্রসম্ভার বৃদ্ধি করে চলেছে।
আন্তর্জাতিক চুক্তির ব্যর্থতা: নিরস্ত্রীকরণ চুক্তিতে স্বাক্ষর করার পরও বিভিন্ন রাষ্ট্র বিভিন্ন সময়ে সেই চুক্তি লঙ্ঘন করে এ বিষয়ে জটিলতার সৃষ্টি করে।
পরমাণু অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের ফলাফল
যুদ্ধের বীভৎসতা: পারমাণবিক যুদ্ধ হলে বিশ্বশান্তি ভীষণভাবে বিপন্ন হয়ে উঠবে।
পরিবেশ দূষণ: পারমাণবিক বিস্ফোরণে অণু-পরমাণুর ভাঙনে যে তীব্র বিস্ফোরণের সৃষ্টি হয়, তার ফলে বহুদূর পর্যন্ত পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দূষিত হয় জল, বাতাস, মাটি। মানুষ, প্রাণীকুল, গাছপালা তথা সমগ্র বিশ্বসংসার বিপন্ন হয়ে পড়ে।
পারমাণবিক বর্জ্যজনিত দূষণ : পারমাণবিক বর্জ্যে সমুদ্রের তলদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জীবজগতে এর মারাত্মক কুপ্রভাব পড়ে। এই বর্জ্যপদার্থের প্রভাবে ভূগর্ভস্থ জল দূষিত হয়, যা নলকূপের মাধ্যমে পানীয়রূপে মানব শরীরের ভয়ংকর ক্ষতিসাধন করে থাকে।
পারমাণবিক দুর্ঘটনা: সমীক্ষা অনুযায়ী কেবলমাত্র আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রেই ৩৮০০-র বেশি পারমাণবিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। মানুষের ভুল কিংবা ডিজাইনের ত্রুটির জন্য পারমাণবিক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে।