![]() |
পশ্চিমবঙ্গের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের গুরুত্ব লেখো। |
কর্মসংস্থান: পশ্চিমবঙ্গে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের মাধ্যমে প্রচুর মানুষের কর্মসংস্থান হয়ে থাকে। পশ্চিমবঙ্গ ক্ষুদ্র শিল্প উন্নয়ন নিগম (WBSIDC)-এর তথ্যানুযায়ী এই মুহূর্তে এ রাজ্যে অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের সংখ্যা 15 লক্ষ, যেখানে প্রায় 40 লক্ষ মানুষ নিয়োজিত রয়েছে। অসংগঠিত ক্ষেত্রে আরও প্রায় 55 লক্ষ মানুষ যুক্ত রয়েছে।
রপ্তানি বাণিজ্যে গুরুত্ব : পশ্চিমবঙ্গের বাইরে অন্য রাজ্যের পাশাপাশি বিশ্ববাজারেও ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ফলে দেশে-বিদেশে বিশাল রপ্তানি বাণিজ্য গড়ে উঠেছে। বিদেশে রপ্তানির মাধ্যমে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জিত হয়।
স্থানীয় সম্পদের পূর্ণ ব্যবহার: কোনো অঞ্চলের কুটির শিল্পে মূলত সেই অঞ্চলে প্রাপ্ত সম্পদকেই কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়। যেমন পূর্ব মেদিনীপুরে মাদুর কাঠির ওপর ভিত্তি করে মাদুর তৈরি শিল্পের বিকাশ ঘটেছে। এর ফলে স্থানীয় সম্পদের পূর্ণ ব্যবহার সম্ভব হয়।
উপজীবিকা সৃষ্টি : অনেক সময় কৃষিকাজের বাইরে বছরের অন্যান্য সময়ে কুটির শিল্পের দ্বারা জীবিকা নির্বাহ হয়। এজন্য গ্রামাঞ্চলে প্রচ্ছন্ন ও মরশুমি বেকারের সংখ্যা হ্রাস পায়। ফলে উপজীবিকা হিসেবে এর যথেষ্ট গুরুত্ব আছে।
আঞ্চলিক অর্থনৈতিক বৈষম্য হ্রাস: ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প আঞ্চলিক অর্থনৈতিক বৈষম্য হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে।
দেশীয় বাণিজ্যের উন্নয়ন: ক্ষুদ্রায়তন শিল্পের উন্নতির কারণে এই রাজ্য তথা দেশে অভ্যন্তরীন বাণিজ্য বৃদ্ধি পেয়েছে, যার ফলে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এসেছে।
পরিকাঠামো বৃদ্ধি: কোনো স্থানে ক্ষুদ্র শিল্পের উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে সেখানকার রাস্তা, বিদ্যুৎ, জল সরবরাহ প্রভৃতি উন্নয়নমূলক পরিকাঠামোও গড়ে ওঠে।
পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতির প্রসার: পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার যে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দ্রব্য তা এক একটি জায়গার সংস্কৃতিকে তুলে ধরে। যেমন শান্তিপুরের তাঁত, বিষ্ণুপুরের টেরাকোটা, কুমোরটুলির মৃৎশিল্প প্রভৃতি শুধু পশ্চিমবঙ্গে নয়, ভারতে নয়, বিশ্ব দরবারে বাংলার সংস্কৃতিকে মেলে ধরে।