তাঁত শিল্প: পশ্চিমবঙ্গের একটি উল্লেখযোগ্য ক্ষুদ্র শিল্প হল তাঁত শিল্প। নদিয়ার শান্তিপুর, ফুলিয়া, বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর, হুগলি জেলার এনেখালি, চন্দননগরের ফরাসডাঙা তাঁত শিল্পের জন্য বিখ্যাত।
মৃৎ শিল্প: কলকাতার কুমোরটুলি মাটির মূর্তি নির্মাণের জন্য, নদিয়ার কৃষ্ণনগর মাটির পুতুল তৈরির জন্য ও বাঁকুড়ার পোড়ামাটির কাজ (টেরাকোটা) বিখ্যাত। এ ছাড়া পশ্চিমবঙ্গোর অধিকাংশ জেলাতেই মৃৎশিল্পীরা (কুমোর) মাটির হাঁড়ি, কলসি, ভাঁড় প্রভৃতি তৈরি করে থাকেন।
রেশম শিল্প: মুরশিদাবাদ, মালদহ, বীরভূম, বাঁকুড়া জেলার একটি উল্লেখযোগ্য শিল্প হল রেশম শিল্প। এই সমস্ত জেলায় তুঁত, পলাশ প্রভৃতি গাছে রেশমকীট পালন করা হয়, যা থেকে এই শিল্পের কাঁচামাল রেশম পাওয়া যায়। মুরশিদাবাদ জেলা থেকে বালুচরি সিল্ক শাড়ির উদ্ভব।
বাঁশ ও বেত শিল্প: পশ্চিমবঙ্গের এটি একটি প্রাচীন কুটির শিল্প। চেয়ার, টেবিল প্রভৃতি দৈনন্দিন ব্যবহার্য নানা জিনিস এই শিল্পে প্রস্তুত করা হয়। দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার জেলার বহু মানুষ এই শিল্পকর্মের সঙ্গে যুক্ত। দার্জিলিং-এর বেতের কাজ আজও বিশ্ববাজারে সমাদৃত।
বিড়ি শিল্প: বন থেকে কেন্দুপাতা সংগ্রহ করে শুকিয়ে তাতে তামাক ভরে বিড়ি প্রস্তুত করা হয়। মুরশিদাবাদ, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, উত্তর ও দক্ষিণ 24 পরগনার বহু জায়গায় এই শিল্প গড়ে উঠেছে।
লৌহজাত দ্রব্য: পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় লোহা থেকে কাস্তে, কোদাল, নিড়ানি, ছুরি, কাঁচি, দা, শাবল ইত্যাদি তৈরির কাজে বহু মানুষ (কামার) নিযুক্ত রয়েছে।
প্রকাশনা ও মুদ্রণ শিল্প : কলকাতার কলেজস্ট্রিট ও ধর্মতলা অঞ্চলে প্রকাশনা ও মুদ্রণের কাজে বহু মানুষ যুক্ত রয়েছে।
অন্যান্য শিল্প : অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের মধ্যে ঝিনুক ও শঙ্খের কাজ (পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর), বাদ্যযন্ত্র নির্মাণ, খেলার সামগ্রী নির্মাণ, খেজুর, তাল, আখের রস থেকে গুড় তৈরি শিল্প, ডোকরাশিল্প (বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর), মাদুর শিল্প (পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর), শীতলপাটি (কোচবিহার), ছৌনাচের মুখোশ তৈরি (পুরুলিয়ার বাঘমুন্ডি), স্বর্ণ শিল্প (কলকাতার বৌবাজার) বিশেষ উল্লেখযোগ্য।