পশ্চিমবঙ্গের চা শিল্পের সমস্যা ও সম্ভাবনা আলোচনা করো

পশ্চিমবঙ্গের চা শিল্পের সমস্যা ও সম্ভাবনা আলোচনা করো
পশ্চিমবঙ্গের চা শিল্পের সমস্যা ও সম্ভাবনা আলোচনা করো।

পশ্চিমবঙ্গের চা শিল্পের সমস্যা

পশ্চিমবঙ্গের অর্থনীতিতে চা শিল্পের অবদান গুরুত্বপূর্ণ হলেও বর্তমানে এই শিল্প বেশ কিছু সমস্যার সম্মুখীন। সমস্যাগুলি হল-

পুরোনো বাগিচা: পশ্চিমবঙ্গের অধিকাংশ চা বাগিচা অত্যন্ত পুরোনো হওয়ায় চা পাতা উৎপাদনের পরিমাণ বেশ কম।

পুরোনো যন্ত্রপাতি: এ রাজ্যের চা কারখানাগুলিতে পুরোনো যন্ত্রপাতির সাহায্যে গতানুগতিক পদ্ধতিতে চা উৎপাদন করা হয়। ফলে, চায়ের উৎপাদন কম হয় ও ব্যয় বেশি হয়।

উৎপাদন ব্যয় বেশি: পশ্চিমবঙ্গে চায়ের উৎপাদন ব্যয় বেশি হওয়ায় দেশের বাজার তথা আন্তর্জাতিক বাজারে এর দাম বেশি। ফলে, ক্রমশই চাহিদা হ্রাস পাচ্ছে।

সুষ্ঠু পরিচালনার অভাব: চা বাগিচা ও কারখানাগুলি বেসরকারি মালিকানাধীনে পরিচালিত হওয়ায় অধিক মুনাফার প্রত্যাশায় শ্রমিকের স্বার্থ বিঘ্নিত হচ্ছে। ফলে ধর্মঘট, লকআউট লেগেই আছে। সুষ্ঠু পরিচালনার অভাবে চা শিল্প কারখানাগুলি ক্রমশই রুগ্ম হয়ে পড়ছে।

অধিক মজুরি: পশ্চিমবঙ্গে চা শিল্পে নিযুক্ত শ্রমিকদের মজুরি অত্যন্ত বেশি হওয়ায় উৎপন্ন চায়ের দাম ভারতের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় বেশি।

গবেষণার অভাব: দার্জিলিং-এর চা-এর গুণগত মান বজায় রাখার জন্য উপযুক্ত গবেষণা বা পরীক্ষানিরীক্ষার ধারাবাহিকতার যথেষ্ট অভাব রয়েছে।

সম্ভাবনা

চা বাঙালি তথা বিশ্বের মানুষের অতি প্রিয় পানীয়। তাই চা শিল্পের ভবিষ্যৎ অত্যন্ত উজ্জ্বল। পশ্চিমবঙ্গের চা শিল্প কারখানাগুলি যে-সকল সমস্যার সম্মুখীন, সেগুলিকে দূর করতে পারলেই চা শিল্পের উন্নতি ত্বরান্বিত হবে। এই উদ্দেশ্যে ‘পশ্চিমবঙ্গ চা উন্নয়ন সংস্থা’ গঠিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে চা-এর গুণগত মান ও উৎকর্ষতা বৃদ্ধি এবং সঠিক মূল্য নির্ধারণের জন্য ‘ইন্ডিয়ান টি বোর্ড’ কাজ করে চলেছে। ফলে, বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে চায়ের উৎপাদন আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। মোটকথা চা-এর উৎপাদন ব্যয় হ্রাস করতে পারলে এবং ঐতিহ্যময় স্বাদ ও গন্ধ বজায় রাখতে পারলে দেশ-বিদেশে পশ্চিমবঙ্গের চা-এর চাহিদা আরও বাড়বে বলে আশা করা যায়।

Leave a Comment