![]() |
পশ্চিমবঙ্গের জনজীবনে মৌসুমি বায়ুর গুরুত্ব ব্যাখ্যা করো। |
পশ্চিমবঙ্গের জনজীবনে মৌসুমি বায়ু খুবই গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে রয়েছে। যথা–
কৃষিক্ষেত্রে প্রভাব: কৃষিপ্রধান রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের কৃষিক্ষেত্রগুলি মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে প্রভাবিত হয়। বর্ষাকালে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে এ রাজ্যে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় এবং তার ফলে ধান, পাট, আখ, চা, তামাক ইত্যাদি চাষ করা সম্ভব হয়। আবার শীতকালে উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে এই রাজ্যে যে স্বল্প বৃষ্টিপাত হয়, তার ফলে গম, ডাল, তৈলবীজ, আলু ইত্যাদি চাষ করা হয়। তবে অতিবৃষ্টি বা অনাবৃষ্টি দুটিই চাষের পক্ষে ক্ষতিকর।
শিল্পক্ষেত্রে প্রভাব: দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে সংঘটিত বৃষ্টিপাতে চা ও পাট চাষ ভালো হয়। ফলে কৃষিভিত্তিক কাঁচামালের ওপর নির্ভর করে এখানে পাট শিল্প ও চা শিল্প গড়ে উঠেছে। এ ছাড়া কাষ্ঠ শিল্প, কাগজ শিল্প গড়ে উঠেছে।
বনজ সম্পদ সৃজান প্রভাব: পশ্চিমবঙ্গে হিমালয় পর্বতের পাদদেশে প্রচুর বৃষ্টিপাতের ফলে তরাই ও ডুয়ার্স অঞ্চলে নিবিড় অরণ্যের সৃষ্টি হয়েছে। এই অরণ্যে প্রচুর মূল্যবান বৃক্ষ, বাঁশ ও বেত জন্মায়। এখানকার শাল, সেগুন, গর্জন, চাপলাস, অর্জুন, পুন, তুন ইত্যাদি মূল্যবান বৃক্ষ থেকে আসবাবপত্র ও গৃহাদি নির্মাণের কাঠ পাওয়া যায়। এ ছাড়া অন্যান্য বৃক্ষের কাঠ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
উপসংহার
পশ্চিমবঙ্গের সামগ্রিক অর্থনীতিতে মৌসুমি বায়ুর প্রভাব অপরিসীম। পরিমিত বৃষ্টিপাত হলে কৃষিজ উৎপাদন বেশি হয়, ফলে অর্থনৈতিক বিকাশ দ্রুত হয়, কিন্তু অতিবৃষ্টি বা অনাবৃষ্টিতে যথাক্রমে বন্যা ও খরা দেখা দিলে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।