![]() |
পশ্চিমবঙ্গের জলবায়ুতে মৌসুমি বায়ুর প্রভাব আলোচনা করো। |
পশ্চিমবঙ্গের জলবায়ুতে মৌসুমি বায়ুর প্রভাব
ঋতুবৈচিত্র্য : পশ্চিমবঙ্গের জলবায়ুতে মৌসুমি বায়ুর প্রধান বৈশিষ্ট্য হল ঋতুবৈচিত্র্য। প্রধানত চারটি ঋতু – গ্রীষ্ম, শরৎ, শীত ও বসন্ত হলেও পশ্চিমবঙ্গে ছয়টি ঋতু লক্ষ করা যায়। যেমন বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য: গ্রীষ্মকাল, আষাঢ়-শ্রাবণ বর্ষাকাল, ভাদ্র-আশ্বিন : শরৎকাল, কার্তিক-অগ্রহায়ণ হেমন্তকাল, পৌষ-মাঘ : শীতকাল, ফাল্গুন-চৈত্র: বসন্তকাল।
উষ্ণতা : পশ্চিমবঙ্গে মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে সামগ্রিকভাবে উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ু বিরাজ করলেও স্থানভেদে উষ্ণতার পার্থক্য দেখা যায়। যেমন গ্রীষ্মকালে কলকাতার গড় উষ্ণতা 35°C হলেও আসানসোলের গড় উষ্ণতা হয় 45°C। আবার শীতকালে উপকূলীয় অঞ্চলের গড় উষ্ণতা 12°C 18°C হলেও পার্বত্য অঞ্চলের উষ্ণতা হিমাঙ্কের নীচে নেমে যায়।
আগমনের অনিশ্চয়তা: দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু সময়ের আগে ঢুকলে বন্যা বা সময়ের পরে এলে খরা হয়।
প্রাকৃতিক ঝঞ্ঝা : মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে গ্রীষ্মকালে ‘কালবৈশাখী’, শরৎকালে ‘আশ্বিনের ঝড়’ ও শীতকালে ‘পশ্চিমি ঝঞ্ঝা’র প্রাদুর্ভাব লক্ষ করা যায়।
শীতল উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর প্রভাব: উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ু পশ্চিমবঙ্গের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও বিভিন্ন স্থানে শীতলতার প্রভেদ লক্ষ করা যায়। যেমন পার্বত্য ও মালভূমি অঞ্চলে উষ্ণতা কম হলেও দক্ষিণবঙ্গে উষ্ণতা খুব কম হয় না।
আর্দ্র গ্রীস্মকাল ও শুষ্ক শীতকাল: পশ্চিমবঙ্গে গ্রীষ্মকালে আর্দ্র দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে প্রচুর বৃষ্টি হয় কিন্তু শীতকালে শুষ্ক উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বৃষ্টি হয় না। তাই আর্দ্র গ্রীষ্মকাল ও শুষ্ক শীতকাল পশ্চিমবঙ্গের জলবায়ুর অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
উষ্ণতার ওপর প্রভাব: গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহের হাত থেকে মৌসুমি বায়ু রক্ষা করে। মৌসুমি বায়ুর আগমনে বৃষ্টি শুরু হয় এবং উয়তা প্রায় কমে যায়। তবে শীতকালে উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে শীতের প্রকোপ অনেক সময় বেড়ে যায়।