পশ্চিমবঙ্গের জলবায়ুর নিয়ন্ত্রকগুলি লেখো

পশ্চিমবঙ্গের জলবায়ুর নিয়ন্ত্রকগুলি লেখো
পশ্চিমবঙ্গের জলবায়ুর নিয়ন্ত্রকগুলি লেখো।
পশ্চিমবঙ্গের জলবায়ু বেশ কতকগুলি বিষয়ের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। জলবায়ুর নিয়ন্ত্রকগুলি হল–

 অক্ষাংশ: অক্ষাংশের তারতম্যের সঙ্গে সঙ্গে জলবায়ুর পরিবর্তন দেখা যায়। কর্কটক্রান্তিরেখা (23½° উত্তর) পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান ও নদিয়া জেলার উপর দিয়ে প্রসারিত। তাই এই রাজ্যের জলবায়ু উয় প্রকৃতির।

হিমালয় পর্বত: এ রাজ্যের উত্তরে হিমালয় পর্বত অবস্থিত। আর্দ্র দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু এই পর্বতে বাধা পেয়ে এ রাজ্যে শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত ঘটায়। আবার সাইবেরিয়ার অতি শীতল বায়ু এই পর্বতের দ্বারা বাধা পায় বলে আমাদের রাজ্যে শীতের তীব্রতাও কম।

ভূমির উচ্চতা: ভূ-পৃষ্ঠ থেকে উপরের দিকে উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে উন্নতা কমতে থাকে। তাই অধিক উচ্চতায় অবস্থিত হওয়ায় দার্জিলিং-এর জলবায়ু শীতল প্রকৃতির, আবার কম উচ্চতার জন্য কলকাতার জলবায়ু উয় প্রকৃতির।

বায়ুপ্রবাহ: বায়ুপ্রবাহ পশ্চিমবঙ্গের জলবায়ুকে নিয়ন্ত্রণ করে। যেমন (1) দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গে বর্ষাকালে বৃষ্টিপাত হয়। (II) শীতকালে উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গে ঠান্ডা পড়ে। (III) গ্রীষ্মকালে স্থানীয় বায়ু ‘লু’-এর প্রভাবে এ রাজ্যে তাপপ্রবাহ চলে। আবার কালবৈশাখীর প্রভাবে মাঝে মাঝেই ঝড়, বৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি হয়। (iv) শীতকালে মাঝে মাঝে পশ্চিম দিক থেকে আগত বায়ুর (পশ্চিমি ঝঞ্ঝা) প্রভাবে বৃষ্টি হয়।

সমুদ্রের প্রভাব :
জলভাগের তাপগ্রহণ ও বিকিরণ ক্ষমতা কম হওয়ায় সমুদ্রের তীরবর্তী অঞ্চলের জলবায়ু সমভাবাপন্ন হয়। আবার সমুদ্র থেকে দূরের জলবায়ু চরমভাবাপন্ন হয়। যেমন বঙ্গোপসাগরের কাছে অবস্থানের জন্য পূর্ব মেদিনীপুর জেলার জলবায়ু সমভাবাপন্ন। অন্যদিকে সমুদ্র থেকে দূরে অবস্থানের জন্য পুরুলিয়া, বাঁকুড়া জেলার জলবায়ু চরমভাবাপন্ন।

সমুদ্র উপকূলে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় (আয়লা), শরৎকালের ‘আশ্বিনের ঝড়’ পশ্চিমবঙ্গের জলবায়ুর ওপর প্রভাব ফেলে।

মৃত্তিকা: মাটির প্রথন ও গঠনের ওপর তাপগ্রহণের তারতম্য দেখা যায়। যেমন- পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিমের মালভূমি অঞ্চলের মাটি দ্রুত গরম ও ঠান্ডা হয়ে যায়। কিন্তু গাঙ্গেয় সমভূমির নবীন পলিমাটি ধীরে ধীরে তাপগ্রহণ করে। তাই জলবায়ুরও তারতম্য দেখা যায়।

Leave a Comment