পশ্চিমবঙ্গের পাট চাষের অনুকূল ভৌগোলিক পরিবেশের বর্ণনা দাও

পশ্চিমবঙ্গের পাট চাষের অনুকূল ভৌগোলিক পরিবেশের বর্ণনা দাও
পশ্চিমবঙ্গের পাট চাষের অনুকূল ভৌগোলিক পরিবেশের বর্ণনা দাও।
ভারত সরকারের Ministry of Agriculture 2011-12 সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গ পাট উৎপাদনে সমগ্র ভারতে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। এই রাজ্যের উত্তরের দার্জিলিং পার্বত্য অঞ্চল এবং পশ্চিমের পুরুলিয়া বাদে প্রায় সর্বত্র কম বেশি পাট উৎপাদিত হয়।

পাট উৎপাদনে পশ্চিমবঙ্গের প্রধান জেলাগুলি হল– নদিয়া, পরগনা, মুরশিদাবাদ, উত্তর 24 পরগনা, দক্ষিণ 24 হাওড়া, হুগলি, মালদহ, উত্তর দিনাজপুর, • দক্ষিণ দিনাজপুর এবং জলপাইগুড়ি প্রভৃতি।

অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশ

জলবায়ু : পশ্চিমবঙ্গের উয়-আর্দ্র মৌসুমি জলবায়ু পাট চাষের পক্ষে আদর্শ।

  • উষ্ণতা : পশ্চিমবঙ্গে সাধারণত বর্ষাকালে পাট চাষ করা – হয়। এই সময় গড় উয়তা 25° সেলসিয়াসের বেশি থাকে, যা পাট চাষের পক্ষে আদর্শ।
  • বৃষ্টিপাত: পশ্চিমবঙ্গে বর্ষাকালে প্রচুর মৌসুমি বৃষ্টিপাত হয়, গড়ে প্রায় 150 – 200 সেমি। পাট চাষের পক্ষে এই বৃষ্টিপাত অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
  • আর্দ্রতা: বর্ষাকালের ভ্যাপসা গরম ও ৪০%-এর অধিক আপেক্ষিক আর্দ্রতা পাট চাষের অনুকূল।

ভূমির প্রকৃতি : নীচু সমভূমিতে পাট চাষ ভালো হয়। তাই গাঙ্গেয় ব-দ্বীপ অঞ্চলের নিম্নসমতল ভূমিতে প্রচুর পাট চাষ হয়ে থাকে।

মৃত্তিকা: এই রাজ্যের সমভূমি অঞ্চলের উর্বর নবীন পলিমাটি ও দোআঁশ মাটি পাট চাষের পক্ষে আদর্শ।

জলাশয়: পাট পচিয়ে আঁশ বের করার জন্য এ রাজ্যে পাট চাষের জমির কাছে খাল-বিল, পুকুরের অভাব নেই।

অনুকূল অর্থনৈতিক পরিবেশ

শ্রমিক: জমিকর্ষণ, বীজ বপন, আগাছা পরিষ্কার, পাট কাটা, পচানো, আঁশ ছাড়ানো প্রভৃতি কাজে প্রচুর দক্ষ শ্রমিকের প্রয়োজন, জনবহুল পশ্চিমবঙ্গে যার অভাব হয় না।

উচ্চফলনশীল বীজ: ব্যারাকপুরের পাট গবেষণাকেন্দ্রে সবুজ সোনা,শ্যামলি, সোনালি, বাসুদেব প্রভৃতি উন্নত মানের বীজ তৈরি করে চাষ করা হচ্ছে।

চাহিদা : হুগলি নদীর দুই তীরে অবস্থিত পাট শিল্পকেন্দ্রগুলিতে যথেষ্ট পরিমাণে কাঁচা পাটের চাহিদা রয়েছে।

সরকারি সুযোগসুবিধা: চাষিদের পাট চাষে উৎসাহ দিতে রাজ্য সরকার বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। যেমন বিনামূল্যে উচ্চফলনশীল বীজ প্রদান, কৃষি ঋণ, পরিবহণের জন্য রাস্তাঘাট নির্মাণ, সরকারিভাবে ন্যায্য মূল্যে পাট কেনার ব্যবস্থা প্রভৃতি।

Leave a Comment