![]() |
পশ্চিমবঙ্গের পাট চাষের অনুকূল ভৌগোলিক পরিবেশের বর্ণনা দাও। |
পাট উৎপাদনে পশ্চিমবঙ্গের প্রধান জেলাগুলি হল– নদিয়া, পরগনা, মুরশিদাবাদ, উত্তর 24 পরগনা, দক্ষিণ 24 হাওড়া, হুগলি, মালদহ, উত্তর দিনাজপুর, • দক্ষিণ দিনাজপুর এবং জলপাইগুড়ি প্রভৃতি।
অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশ
জলবায়ু : পশ্চিমবঙ্গের উয়-আর্দ্র মৌসুমি জলবায়ু পাট চাষের পক্ষে আদর্শ।
- উষ্ণতা : পশ্চিমবঙ্গে সাধারণত বর্ষাকালে পাট চাষ করা – হয়। এই সময় গড় উয়তা 25° সেলসিয়াসের বেশি থাকে, যা পাট চাষের পক্ষে আদর্শ।
- বৃষ্টিপাত: পশ্চিমবঙ্গে বর্ষাকালে প্রচুর মৌসুমি বৃষ্টিপাত হয়, গড়ে প্রায় 150 – 200 সেমি। পাট চাষের পক্ষে এই বৃষ্টিপাত অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
- আর্দ্রতা: বর্ষাকালের ভ্যাপসা গরম ও ৪০%-এর অধিক আপেক্ষিক আর্দ্রতা পাট চাষের অনুকূল।
ভূমির প্রকৃতি : নীচু সমভূমিতে পাট চাষ ভালো হয়। তাই গাঙ্গেয় ব-দ্বীপ অঞ্চলের নিম্নসমতল ভূমিতে প্রচুর পাট চাষ হয়ে থাকে।
মৃত্তিকা: এই রাজ্যের সমভূমি অঞ্চলের উর্বর নবীন পলিমাটি ও দোআঁশ মাটি পাট চাষের পক্ষে আদর্শ।
জলাশয়: পাট পচিয়ে আঁশ বের করার জন্য এ রাজ্যে পাট চাষের জমির কাছে খাল-বিল, পুকুরের অভাব নেই।
অনুকূল অর্থনৈতিক পরিবেশ
শ্রমিক: জমিকর্ষণ, বীজ বপন, আগাছা পরিষ্কার, পাট কাটা, পচানো, আঁশ ছাড়ানো প্রভৃতি কাজে প্রচুর দক্ষ শ্রমিকের প্রয়োজন, জনবহুল পশ্চিমবঙ্গে যার অভাব হয় না।
উচ্চফলনশীল বীজ: ব্যারাকপুরের পাট গবেষণাকেন্দ্রে সবুজ সোনা,শ্যামলি, সোনালি, বাসুদেব প্রভৃতি উন্নত মানের বীজ তৈরি করে চাষ করা হচ্ছে।
চাহিদা : হুগলি নদীর দুই তীরে অবস্থিত পাট শিল্পকেন্দ্রগুলিতে যথেষ্ট পরিমাণে কাঁচা পাটের চাহিদা রয়েছে।
সরকারি সুযোগসুবিধা: চাষিদের পাট চাষে উৎসাহ দিতে রাজ্য সরকার বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। যেমন বিনামূল্যে উচ্চফলনশীল বীজ প্রদান, কৃষি ঋণ, পরিবহণের জন্য রাস্তাঘাট নির্মাণ, সরকারিভাবে ন্যায্য মূল্যে পাট কেনার ব্যবস্থা প্রভৃতি।