পশ্চিমবঙ্গের পাট শিল্পের উন্নতির কারণগুলি লেখো

পশ্চিমবঙ্গের পাট শিল্পের উন্নতির কারণগুলি লেখো
পশ্চিমবঙ্গের পাট শিল্পের উন্নতির কারণগুলি লেখো।

হুগলি নদীর উভয় তীরে পাটশিল্পের একদেশীভবনের কারণগুলি আলোচনা করো।

পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম অর্থ উপার্জনকারী শিল্প হল পাট শিল্প। 1854 সালে এ রাজ্যের রিষড়ায় ভারতের প্রথম পাটকলটি গড়ে ওঠে। পশ্চিমবঙ্গের অধিকাংশ পাটকলই হুগলি নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে গড়ে উঠেছে। এর প্রধান কারণগুলি হল-

ঐতিহাসিক কারণ: পাট শিল্প স্থাপনের প্রথম অবস্থায় কলকাতা ছিল ইংরেজদের রাজধানী ও প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র। তাই কলকাতাকে কেন্দ্র করে হুগলি নদীর উভয় তীরে পাট শিল্পের বিকাশে তারা অর্থ বিনিয়োগ করে।

কাঁচা পাটের সহজলভ্যতা : পশ্চিমবঙ্গ পাট উৎপাদনে ভারতে প্রথম। এ রাজ্যে হুগলি, উত্তর 24 পরগনা, নদিয়া, পূর্ব বর্ধমান, মুরশিদাবাদ, দক্ষিণ 24 পরগনা, হাওড়া প্রভৃতি জেলায় প্রচুর পাট উৎপন্ন হয়। ফলে, পাটকলগুলির প্রয়োজনীয় কাঁচা পাটের অভাব হয় না।

কলকাতা বন্দরের সুবিধা: কলকাতা বন্দরের মাধ্যমে পাটজাত দ্রব্য রপ্তানি এবং বিদেশ থেকে যন্ত্রপাতি আমদানির সুবিধা পশ্চিমবঙ্গের পাট শিল্পের উন্নতির অন্যতম কারণ।

শক্তি সম্পদের প্রাচুর্য: পাট শিল্পের প্রয়োজনীয় কয়লা রানিগঞ্জ থেকে পাওয়া যায়। এ ছাড়া কোলাঘাট, ব্যান্ডেল, কাশীপুর, বজবজ, টিটাগড় প্রভৃতি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ও দামোদর উপত্যকার জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে শিল্পের প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ পাওয়া যায়।

উন্নত পরিবহণ ব্যবস্থা: পশ্চিমবঙ্গের পাটকলগুলি জলপথ, সড়কপথ ও রেলপথের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত। ফলে, শিল্পের প্রয়োজনীয় কাঁচামাল, কয়লা, যন্ত্রপাতি ও শিল্পজাত দ্রব্য পরিবহণে বিশেষ সুবিধা পাওয়া যায়। জারিত ছি

আর্দ্র জলবায়ু : হুগলি নদীর তীরবর্তী অঞ্চলের আর্দ্র জলবায়ু পাটতত্ত্ব বয়নে অত্যন্ত উপযোগী।

সুলভ শ্রমিক : পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খণ্ড ও উত্তরপ্রদেশের দক্ষ ও সুলভ শ্রমিক পাট শিল্পের উন্নতি ঘটিয়েছে।

জলসম্পদ: পাট শিল্পের প্রয়োজনীয় জল হুগলি নদী থেকে পাওয়া যায়।

চাহিদা: দেশে-বিদেশে পাটজাত দ্রব্যের বিপুল চাহিদা এই শিল্পের বিকাশে সাহায্য করেছে।

মূলধন বিনিয়োগ: প্রাথমিক অবস্থায় ইংরেজরা এবং পরবর্তীকালে দেশীয় শিল্পপতি, বিভিন্ন অর্থলগ্নি সংস্থা ও ব্যাংক এই শিল্পের প্রয়োজনীয় মূলধনের জোগান অব্যাহত রেখেছে।

Leave a Comment