![]() |
পশ্চিমবঙ্গের পার্বত্য নদ-নদীর সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। |
উত্তরাঞ্চল বা পার্বত্য অঞ্চল বা উত্তরবঙ্গের নদনদীসমূহ
প্রধান প্রধান নদনদী
তিস্তা (315 কিমি) : দার্জিলিং-হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলের সর্বপ্রধান নদী তিস্তা সিকিমের জেমু হিমবাহ থেকে উৎপন্ন হয়ে প্রথমে সিকিম ও পরে পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ি জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বাংলাদেশে যমুনার সঙ্গে মিলিত হয়েছে। বড়ো রঙ্গিত, রিয়াং, রংপো, রিল্লি ইত্যাদি নদীগুলি হল তিস্তার উপনদী। বর্ষাকালে এই নদীতে ভয়ানক বন্যা হয় বলে একে ‘ত্রাসের নদী’ বলে।
তোর্সা (প্রায় 320 কিমি): চিনের অন্তর্গত তিব্বতের চুম্বি উপত্যকা থেকে উৎপন্ন হয়ে তোর্সা ভুটানে আমুচু নামে প্রবাহিত হয়েছে। এটি উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার জেলা অতিক্রম করে দক্ষিণে প্রবাহিত হয়েছে। কালজানি নদীর সঙ্গে মিলিত হয়ে এই নদী বাংলাদেশে যমুনার সঙ্গে মিলিত হয়েছে। তোর্সার দুটি উপনদী হল- কালজানি ও হলং।
মহানন্দা (প্রায় 360 কিমি) : দার্জিলিং হিমালয়ের মহালধিরাম পর্বতের পাগলাঝোরা প্রস্রবণ থেকে উৎপন্ন হয়ে প্রথমে দক্ষিণে ও তারপর দক্ষিণ-পশ্চিমে প্রবাহিত হয়ে বিহারের মধ্যভাগ দিয়ে প্রবাহের পর এটি পশ্চিমবঙ্গের মালদায় প্রবেশ করেছে এবং শেষে বাংলাদেশের পদ্মা নদীতে মিলিত হয়েছে। এর প্রধান উপনদী হল বালাসন ও মেচি।
জলঢাকা (প্রায় 192 কিমি): সিকিম-ভুটান সীমান্তবর্তী পার্বত্য অঞ্চলের বিদাং হ্রদ থেকে জলঢাকা নদী উৎপন্ন হয়ে পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি ও কোচবিহার জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বাংলাদেশের যমুনা নদীতে মিলিত হয়েছে। এর উপনদীগুলি হল নকশালখোলা, মুজনাই, ডায়না, দুদুয়া, বিরুখোলা, বিন্দুখোলা প্রভৃতি।
নদীগুলির বৈশিষ্ট্য –
- এই অঞ্চলের নদীগুলির বেশিরভাগই হিমবাহ বা প্রস্রবণ থেকে সৃষ্ট।
- নদীগুলি মূলত দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ববাহিনী। নদীগুলি বরফগলা জলে পুষ্ট এবং নিত্যবহ।
- নদীগুলি অত্যন্ত খরস্রোতা বলে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের উপযোগী।
- নদীগুলির খাত খুব গভীর এবং ‘V’ আকৃতির ন্যায়।
- নদীগুলির বেশিরভাগই বাংলাদেশের যমুনা নদীর উপনদী।
- নদীগুলি বন্যাপ্রবণ।
- এখানকার নদীগুলি কোনোটাই সরাসরি সমুদ্রে মেশেনি বলে নদীগুলিতে জোয়ারভাটা হয় না।