পশ্চিমাঞ্চলের বা পশ্চিমের মালভূমি ও রাঢ় অঞ্চলের নদনদীসমূহ
প্রধান প্রধান নদনদী
দামোদর (592 কিমি): ঝাড়খণ্ডের পালামৌ জেলার খামারপাত পাহাড় থেকে উৎপন্ন হয়ে দামোদর মালভূমি অঞ্চলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে হুগলি নদীতে পড়েছে। এর প্রধান শাখানদী মুন্ডেশ্বরী এবং উপনদী বোকারো ও বরাকর। পূর্বে এই নদীতে বন্যা হত বলে, একে ‘বাংলার দুঃখ’ বা ‘দুঃখের নদ’ বলা হত।
অজয় (276 কিমি): অজয় ছোটোনাগপুর মালভূমি থেকে উৎপন্ন হয়ে পশ্চিম বর্ধমান ও বীরভূমের সীমানা দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কাটোয়ার কাছে ভাগীরথীতে মিশেছে। হিংলো, কুনুর এর উপনদী।
ময়ূরাক্ষী (241 কিমি): ঝাড়খণ্ডের সাঁওতাল পরগনার ত্রিকূট পাহাড় থেকে সৃষ্ট এই নদী বীরভূম জেলাকে অতিক্রম করে ভাগীরথীতে পড়েছে। এর উপনদীগুলি হল ব্রাহ্মণী, বক্রেশ্বর, কোপাই, দ্বারকা প্রভৃতি।
দ্বারকেশ্বর: পুরুলিয়ার তিলাবনি পাহাড় থেকে উৎপন্ন হয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের কাছে শিলাবতী বা শিলাই নদীতে মিশেছে।
রূপনারায়ণ (138 কিমি): মেদিনীপুরের ঘাটালের কাছে দ্বারকেশ্বর ও শিলাবতী বা শিলাই নদী মিলিত হয়ে রূপনারায়ণ সৃষ্টি হয়েছে। এই নদী দক্ষিণ-পূর্বে প্রবাহিত হয়ে গেঁওখালির কাছে হুগলি নদীতে মিশেছে।
কংসাবতী বা কাঁসাই (336 কিমি): অযোধ্যা পাহাড় থেকে উৎপন্ন হয়ে কংসাবতী পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ঝাড়গ্রামে প্রবেশ করে দুটি শাখায় বিভক্ত হয়েছে। এর একটি শাখা রূপনারায়ণের সঙ্গে মিলিত হয়েছে ও অপর শাখাটি কেলেঘাই নদীর সঙ্গে মিলিত হয়ে হলদি নাম নিয়ে হুগলি নদীতে পড়েছে। এর একটি উপনদী হল কুমারী।
সুবর্ণরেখা (477 কিমি): ঝাড়খণ্ডের ছোটোনাগপুর মালভূমি অঞ্চল থেকে সৃষ্ট হয়ে এই নদী পশ্চিমবঙ্গের মালভূমি অঞ্চলের খুব অল্প স্থান দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে।
নদীগুলির বৈশিষ্ট্য
- এই অঞ্চলের নদনদীগুলি পশ্চিম থেকে প্রবাহিত হয়ে পূর্ব ও দক্ষিণবাহিনী হয়েছে।
- নদীগুলি মূলত অনুচ্চ পাহাড় ও মালভূমি থেকে উৎপন্ন হয়েছে।
- নদীগুলির অধিকাংশই ভাগীরথী-হুগলি নদীর উপনদী।
- নদীগুলি বৃষ্টির জলে পুষ্ট। নদীগুলি গ্রীষ্মকালে শুষ্ক থাকে।
- নদীগুলি খরস্রোতা বলে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়।
- বর্ষাকালে নদীগুলিতে বন্যা হয়। নদীবক্ষে চর দেখা যায়।