![]() |
পশ্চিমবঙ্গের শিল্পোন্নয়নের অনুকূল পরিবেশগুলির বর্ণনা দাও। |
কাঁচামালের সহজলভ্যতা: শিল্পের প্রয়োজনীয় কৃষিজ ও খনিজ উভয় কাঁচামালই এ রাজ্যে পাওয়া যায়। যেমন পাট শিল্পের কাঁচা পাট, চা শিল্পের চা, চিনি শিল্পের আখ, পশম শিল্পের তুঁত প্রভৃতি হল কৃষিজ কাঁচামাল। অপরদিকে রানিগঞ্জের কয়লাকে কেন্দ্র করে লৌহ-ইস্পাত শিল্প বিকাশলাভ করেছে।
শক্তিসম্পাদর প্রাচুর্য: পশ্চিমবঙ্গের বক্রেশ্বর, ব্যান্ডেল, সাঁওতালডিহি, কোলাঘাট, ফারাক্কা, কাশিপুর, টিটাগড়, বজবজ প্রভৃতি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং মাইথন-পাঞ্চেৎ, তিলাইয়া, জলঢাকা, ছোটো রঙ্গিত প্রভৃতি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি শিল্পের প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎশক্তির জোগান দেয়।
অনুকূল জলবায়ু : পশ্চিমবঙ্গের জলবায়ু উষ্ণ-আর্দ্র মৌসুমি প্রকৃতির যা বিভিন্ন শিল্প বিকাশের সহায়ক।
জলের প্রাচুর্য : পশ্চিমবঙ্গ নদীমাতৃক রাজ্য, ফলে যে-কোনো শিল্পের প্রয়োজনীয় জলের অভাব এ রাজ্যে হয় না।
উন্নত পরিবহণ ব্যবস্থা: পশ্চিমবঙ্গে পূর্ব রেলপথ, দক্ষিণ-পূর্ব রেলপথ, 2, 5, 6, 34, 41 নম্বর জাতীয় সড়কপথ, রাজ্য সড়কপথ, আকাশপথ ও জলপথ (হুগলি নদী) জালের মতো বিস্তার লাভ করে রয়েছে। ফলে, এ রাজ্যে কাঁচামাল ও শিল্পজাত দ্রব্য পরিবহণে কোনো অসুবিধা হয় না।
বন্দরের সুবিধা: পশ্চিমবঙ্গের প্রধান দুটি বন্দর হল কলকাতা ও হলদিয়া। এই দুই বন্দরের সাহায্যে কাঁচামাল, যন্ত্রপাতি আমদানি এবং শিল্পজাত দ্রব্য রপ্তানির সুবিধা রয়েছে।
শ্রমিকের সহজলভ্যতা : জনবহুল পশ্চিমবঙ্গ এবং প্রতিবেশী রাজ্যগুলি (বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা প্রভৃতি) থেকে শিল্পের প্রয়োজনীয় দক্ষ শ্রমিক সহজেই পাওয়া যায়।
চাহিদা: পশ্চিমবঙ্গ একটি জনবহুল রাজ্য। তাই এ রাজ্যে শিল্পজাত পণ্যের চাহিদা বিপুল। এই চাহিদা পরোক্ষভাবে শিল্পোন্নয়নে সহায়তা করে।
মূলধনের প্রাচুর্য: শিল্প স্থাপনে প্রচুর মূলধনের প্রয়োজন হয়। পশ্চিমবঙ্গে বহু ব্যাংক, লগ্নিকারী সংস্থা ও শিল্পপতিরা রয়েছেন। তাই শিল্পের প্রয়োজনীয় মূলধন সহজেই পাওয়া যায়।
অনুকূল সরকারি নীতি: পশ্চিমবঙ্গের সরকার দ্বারা গৃহীত শিল্পনীতি শিল্প বিকাশের অনুকূল এবং রাজ্য সরকার শিল্পোন্নয়নে সদাসচেষ্ট।