![]() |
পশ্চিমবঙ্গে কৃষি উন্নয়নে গৃহীত ব্যবস্থাগুলি উল্লেখ করো। |
ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাহিদা মেটাতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার বিভিন্ন পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় একাধিক কৃষি-উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। যার ফলে, পশ্চিমবঙ্গের কৃষি-উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়েছে। গৃহীত কর্মসূচিগুলি হল –
কৃষিজমির পরিমাণ বৃদ্ধি: পতিত জমি, লবণাক্ত জমি, জলাভূমি উদ্ধার করে কৃষিকাজের উপযোগী করে তোলার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ফলে, বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে 60 শতাংশের বেশি জমি কৃষিযোগ্য।
বহু ফসলি জমির পরিমাণ বৃদ্ধি: ক্রমবর্ধমান খাদ্যের চাহিদা মেটাতে ফসলের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য একই জমি থেকে বছরে একাধিক ফসল উৎপাদনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এর ফলে, বর্তমানে এ রাজ্যের শতকরা 78 ভাগ জমি বহুফসলি।
জলসেচের প্রসার: বছরের বিভিন্ন সময়ে চাষের প্রয়োজনীয় জল পাওয়ার উদ্দেশ্যে ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বৃহৎ সেচপ্রকল্প রূপায়ণ করে সেচসেবিত জমির পরিমাণ বৃদ্ধির দিকে নজর দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে রাজ্যের শতকরা 54 ভাগেরও বেশি কৃষিজমি সেচসেবিত।
আধুনিক কৃষি পদ্ধতির প্রয়োগ: আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি (ট্র্যাক্টর, হারভেস্টর), রাসায়নিক সার, কীটনাশক ব্যবহারের মাধ্যমে আধুনিক পদ্ধতিতে কৃষিকাজ করার জন্য রাজ্য সরকার কৃষকদের নানাভাবে সাহায্য করছে।
উচ্চফলনশীল বীজের ব্যবহার বৃদ্ধি: আমাদের রাজ্যে 1966 সালে প্রথম উচ্চফলনশীল বীজের ব্যবহার শুরু হয়। এরপর থেকে কৃষকদের উচ্চফলনশীল বীজ সরবরাহের জন্য রাজ্য সরকার বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
অন্যান্য ব্যবস্থা: এ ছাড়া কৃষি উন্নয়নে গৃহীত অন্যান্য ব্যবস্থাগুলি হল –
(i) উচ্চফলনশীল বীজ তৈরি প্রভৃতি বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণার জন্য রাজ্যে কৃষি গবেষণাকেন্দ্র (কালিম্পং), কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (কল্যাণী) প্রভৃতি গড়ে তোলা হয়েছে।
(ii) বিভিন্ন ফসল সংরক্ষণের জন্য রাজ্যে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে বহু কোল্ডস্টোরেজ গড়ে উঠেছে।
(iii) কৃষকদের দারিদ্র্যতা দূরীকরণের জন্য মজুরি বৃদ্ধি, 100 দিনের কাজের সুযোগ, শস্য বিমা, কৃষি ঋণ, কৃষি ক্রেডিট কার্ড প্রচলন, কৃষিক্ষেত্রে ভরতুকি প্রভৃতি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
(iv) কৃষিবাজার গঠনের উদ্দেশ্যে রাজ্য সরকার সংযোগকারী রাস্তা, গুদাম ঘর, সেতু, কালভার্ট প্রভৃতি তৈরি করছে।
(v) ভূমি সংস্কার ছাড়া দরিদ্র কৃষকদের ক্ষুদ্র জলসেচ ব্যবস্থার আওতায় আনা হচ্ছে এবং কৃষি জমি বাঁচাতে নদী পাড় ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।