পশ্চিমবঙ্গে জলের বহুমুখী ব্যবহার আলোচনা করে জলসম্পদের প্রভাব বর্ণনা করো

পশ্চিমবঙ্গে জলের বহুমুখী ব্যবহার আলোচনা করে জলসম্পদের প্রভাব বর্ণনা করো
পশ্চিমবঙ্গে জলের বহুমুখী ব্যবহার আলোচনা করে জলসম্পদের প্রভাব বর্ণনা করো।

পশ্চিমবঙ্গে জলের বহুমুখী ব্যবহার

মানুষসহ সমগ্র জীবজগৎ সৃষ্টিতে জলের গুরুত্ব অপরিসীম। পশ্চিমবঙ্গের জলসম্পদ হিসেবে ভূ-পৃষ্ঠস্থ জল ও ভৌমজলের বহুমুখী ব্যবহার নিম্নে আলোচিত হল-

কৃষিকাজে ব্যবহার: কৃষিকাজ পশ্চিমবঙ্গের প্রধান জীবিকা। ভাগীরথী, হুগলি নদীর উর্বর প্লাবনভূমিতে ভৌমজল ও জলসেচের সাহায্যে চাষাবাদ করা হয়।

পরিবহণের কাজে :
পরিবহণে জলপথের জুড়ি নেই। হুগলি নদীতে জাহাজ, ট্রলার, নৌকার মাধ্যমে পরিবহণ কার্য করা হয়। সুন্দরবনের পরিবহণের অন্যতম মাধ্যম নদী।

জলবিদ্যুৎ উৎপাদান: পশ্চিমবঙ্গের পার্বত্য ও মালভূমি অঞ্চলের কিছু খরস্রোতা নদীতে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। যেমন জলঢাকা, ম্যাসাঞ্জোব, ছোটো রঙ্গিত, বাঘমুন্ডি প্রভৃতি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র।

পানীয় ও দৈনন্দিন ব্যবহারে :
মাটির নীচের ভৌমজল কূপ, নলকূপের মাধ্যমে তুলে এনে বা নদীর জল বিশুদ্ধ করে পানীয় হিসেবে ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া দৈনন্দিন কাজে প্রচুর জল ব্যবহার করা হয়।

শিল্পক্ষেত্রে  ব্যবহার: শিল্প গড়ে তোলার ক্ষেত্রে জলের প্রয়োজনীয়তা আবশ্যক। যেমন হুগলি নদীর জল হুগলি শিল্পাঞ্চলের এবং হলদি নদীর জল হলদিয়া শিল্পাঞ্চলের জলের জোগান দিয়ে থাকে।

মাছ চাষ : 
নদী ও খালের জলকে কাজে লাগিয়ে ভেড়ি তৈরি করে মাছ চাষ করা হয়। যেমন সুন্দরবনের খাঁড়ি অঞ্চলের জলাভূমির মৎস্য চাষ।

পশুপালন:
ভৌমজল, নদী-খাল, জলাশয়ের জল পশুপালনে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়।

জলসম্পদের প্রভাব

সুপ্রভাব: (1) পশ্চিমবঙ্গে কৃষি উৎপাদন বিশেষত ধান, পাট, চা-এর উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। (II) পশ্চিমবঙ্গে তাপবিদ্যুৎ ও জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রসার ঘটেছে। (III) বিভিন্ন শিল্প উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। (iv) শহর-নগরের প্রসার ঘটেছে। (v) মৎস্য চাষের উন্নতি ঘটেছে।

কুপ্রভাব : (1) জলদূষণ বৃদ্ধি পেয়েছে। (ii) আর্সেনিকের প্রভাব বেড়ে চলেছে। (III) মাটির উর্বরতা হ্রাস পাচ্ছে। (iv) শহরাঞ্চলে জলসংকট প্রকট হচ্ছে। (v) জলবাহিত রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

Leave a Comment