“পূর্ণ ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ সম্ভবও নয়, কাম্যও নয়”-এই মত কী তুমি সমর্থন করো? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও

Table of Contents

“পূর্ণ ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ সম্ভবও নয়, কাম্যও নয়”-এই মত কী তুমি সমর্থন করো? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও

"পূর্ণ ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ সম্ভবও নয়, কাম্যও নয়”-এই মত কী তুমি সমর্থন করো? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।
“পূর্ণ ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ সম্ভবও নয়, কাম্যও নয়”-এই মত কী তুমি সমর্থন করো? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।

পূর্ণ ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ সম্ভবও নয়, কাম্যও নয়

কঠোর ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির বাস্তব প্রয়োগ সম্ভব নয়, তার কারণগুলি হল-

[1] সরকারের বিভিন্ন বিভাগে সহযোগিতার অভাব

ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি যদি বাস্তবে কার্যকরী হয়, তাহলে প্রত্যেক বিভাগ আপন বিভাগের কাজকর্ম ও ক্ষমতার সংরক্ষণ নিয়েই ব্যস্ত থাকবে। এক বিভাগ অপর বিভাগকে সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসবে না। যা সুষ্ঠু শাসনকার্যে বাধা সৃষ্টি করে।

[2] মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই নীতি প্রয়োগের ফলে অসংগতি সৃষ্টি

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির পরিপূর্ণ প্রয়োগ ঘটা সম্ভবপর নয়। কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি বিভাগ স্বতন্ত্রভাবে বিভাগীয় কাজকর্ম সম্পাদন করতে পারে না। প্রতিটি বিভাগের উপর অপর দুটি বিভাগের কিছু না কিছু নিয়ন্ত্রণ পরিলক্ষিত হয়ে থাকে।

[3] ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির বাস্তব প্রয়োগ অসম্ভব

ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির বাস্তব প্রয়োগ সম্ভব নয়। কারণ পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিই হল গণতান্ত্রিক সরকারের মূল মন্ত্র। এখানে কোনো-না-কোনোভাবে এক বিভাগ অপর বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করতে বা অন্য বিভাগের উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে।

কঠোর ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি সমীচীনও নয়

কঠোর ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি সমীচীন বা কাম্যও নয়, তার কারণগুলি হল-

[1] বিভিন্ন বিভাগের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে দ্বন্দ্ব: ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ

নীতি কার্যকরী হলে প্রতিটি বিভাগ পরস্পরের সঙ্গে প্রাধান্য প্রতিষ্ঠার দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়, কিন্তু সরকারের কাজকর্মের সামগ্রিক সাফল্যের জন্য প্রতিযোগিতা নয়, সহযোগিতাই কাম্য।

[2] সংসদীয় শাসনব্যবস্থায় এই নীতির প্রয়োগ অসম্ভব

সংসদীয় শাসনব্যবস্থায় ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির প্রয়োগ সম্ভব নয়। কারণ এইরূপ শাসনব্যবস্থায় আইনসভার সংখ্যাগরিষ্ঠ দল সরকার গঠন করে ফলে এক বিভাগ আর এক বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

[3] বিভাগীয় স্বৈরাচারিতার পথ প্রশস্ত

ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি কার্যকরী হলে, স্বৈরাচারের বদলে ব্যক্তিস্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত হবে না। বরং, স্বৈরাচারের পথ প্রশস্ত হবে।

[4] ব্যক্তিস্বাধীনতার একমাত্র রক্ষাকবচ নয়

সরকারের স্বৈরাচারী কার্যকলাপের হাত থেকে ব্যক্তিস্বাধীনতাকে রক্ষা করার জন্য মন্তেস্কু ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির সুপারিশ করেছিলেন। কিন্তু বাস্তবে ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির প্রয়োগ ব্যক্তিস্বাধীনতার একমাত্র রক্ষাকবচ নয়। এর জন্য প্রয়োজন জাগ্রত জনচেতনা এবং স্বাধীনতাকে রক্ষা করার জন্য তীব্র স্পৃহা।*

উপসংহার

পরিশেষে বলা যায়, পৃথিবীর কোনো রাষ্ট্রে পূর্ণ ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির প্রয়োগ সম্ভব না হলেও আংশিক ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ অবশ্যই প্রয়োজন।

আরও পড়ুন – জাতি ও জাতীয়তাবাদ প্রশ্ন উত্তর

Leave a Comment