ফিফ ও ভ্যাসালেজ সম্পর্কে টীকা লেখো

ফিফ ও ভ্যাসালেজ সম্পর্কে টীকা লেখো

ফিফ ও ভ্যাসালেজ সম্পর্কে টীকা লেখো
ফিফ ও ভ্যাসালেজ সম্পর্কে টীকা লেখো

ভূমিকা

খ্রিস্টীয় দশম থেকে দ্বাদশ শতকের মধ্যে পশ্চিম ইউরোপে সামন্ততন্ত্রের পূর্ণ বিকাশ ঘটে। তাই ঐতিহাসিক মার্ক ব্লখ, গ্যানশফ দশম থেকে একাদশ শতককে সামন্ততন্ত্রের ধ্রুপদি যুগ বলে উল্লেখ করেছেন। সামন্ততন্ত্র যেসকল প্রথা বা উপাদানের ভিত্তিতে বিকশিত হয়েছিল তার মধ্যে অন্যতম ছিল ফিফ ও ভ্যাসালেজ।

(1) ফিফ: ফিফ (Fief) হল ইউরোপের সামন্ততন্ত্রের অন্যতম প্রধান ভিত্তি বা উপাদান। সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থায় ঊর্ধ্বতন সামন্তপ্রভু তাঁর অধস্তন সামন্ত (ভ্যাসাল)-কে সেবা, আনুগত্য ও সামরিক দায়িত্ব পালনের শর্তে জমি বা ভূমিখণ্ড দান করতেন। এই জমি বা ভূখণ্ড ফিফ নামে পরিচিত। ‘ইনভেস্টিচার’ নামক একটি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নিম্ন সামন্তরা (ভ্যাসাল) আজীবন ‘ফিফ’ বা জমি ভোগদখলের বৈধ অধিকার পেতেন।

(2) ভ্যাসালেজ: সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থায় ‘ফিফ’ ও ‘ভ্যাসালেজ’ ছিল অঙ্গাঙ্গীভাবে সম্পর্কযুক্ত। কারণ ঊর্ধ্বতন সামন্তপ্রভু যেমন তাঁর অনুগত সামন্তকে নির্দিষ্ট কিছু শর্তের বিনিময়ে ‘ফিফ’ বা জমি ভোগদখলের অধিকার দিতেন, তেমনি অনুগত সামন্তদের জীবন ও সম্পত্তির রক্ষার দায়িত্বও তিনি নিতেন। সামন্তপ্রভু ও তাঁর ভ্যাসালদের মধ্যে এই আনুগত্য ও নিরাপত্তা রক্ষার সম্পর্ক সাধারণভাবে ‘ভ্যাসালেজ’ নামে পরিচিত।

মূল্যায়ন

উপরোক্ত আলোচনার ভিত্তিতে এ কথাই বলা যায় যে, ফিফ ও ভ্যাসালেজ হল মধ্যযুগে ইউরোপের সামন্ততন্ত্রের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। ঐতিহাসিক গ্যানশফ, মার্ক ব্লখ প্রমুখরা ফিফ ও ভ্যাসালেজকে ‘সামন্ততন্ত্রের ভরকেন্দ্র’ বলে উল্লেখ করেছেন।

আরও পড়ুন – নুন কবিতার বড় প্রশ্ন উত্তর

Leave a Comment