![]() |
বাংলায় বিজ্ঞানচর্চায় সুকুমার রায়ের অবদান সংক্ষেপে আলোচনা করো। |
মেধা ও প্রতিভার অসাধারণ সমন্বয়
অনন্য সাহিত্যপ্রতিভার অধিকারী সুকুমার রায় বিজ্ঞানচর্চাতেও সমানভাবে পারদর্শী ছিলেন। পারিবারিক সূত্রেই তাঁর মধ্যে বিজ্ঞানচেতনা ও সাহিত্যরস সঞ্চারিত হয়েছিল। তাঁর এই বিজ্ঞানসাধনার সূত্রপাত ঘটে ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় রসায়ন ও পদার্থবিদ্যায় স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করার মাধ্যমে। ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে তিনি ‘গুরুপ্রসন্ন ঘোষ স্কলারশিপ’ পান এবং আলোকচিত্র ও মুদ্রণ প্রযুক্তির ওপর উচ্চতর শিক্ষাগ্রহণ ও গবেষণার জন্য ইংল্যান্ডে যান।
প্রাবন্ধিক, আলোকচিত্রী ও লিথোগ্রাফার
পরবর্তীকালে সুকুমার হয়ে ওঠেন ভারতের অন্যতম আলোকচিত্রী ও লিথোগ্রাফারদের একজন। হাফটোন মুদ্রণ প্রযুক্তির ওপর গবেষণা চালিয়ে ১৯১২ খ্রিস্টাব্দে তিনি ‘Halftone Facts Summarized’ নামে একটি রচনা প্রকাশ করেন। ওই একই সময়েই তিনি ইংল্যান্ডের ‘Royal Photographic Society’-তে যোগদান করেন। ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে ‘The British Journal of Photography’-তে তিনি ‘Pin-hole theory’ নিয়ে একটি মনোজ্ঞ প্রবন্ধ লেখেন। তাঁর তোলা বিখ্যাত কিছু ছবিও বিদেশি পত্রিকায় ছাপানো হয়।
অবদান ও কৃতিত্ব
সুকুমার ‘সন্দেশ’-এর সম্পাদক হওয়ার পর বিজ্ঞান ও কারিগরি জগতের বিভিন্ন আবিষ্কার নিয়ে রচিত তাঁর বিভিন্ন নিবন্ধ শিশু ও কিশোর মনে সাড়া ফেলে। এইসময় প্রকাশিত হয়েছিল রেডিয়ো, টেলিফোন, এরোপ্লেন, রকেট, সুকুমার রায় ক্যালকুলেটার প্রভৃতি যন্ত্র ও তাদের কৌশল নিয়ে তাঁর বিভিন্ন লেখা। সুকুমার সহজসরল ভাষার গুণে খুব সহজেই তরুণ পাঠককুলকে প্রভাবিত করতে পেরেছিলেন।
১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে কালাজ্বরে আক্রান্ত হয়ে মাত্র সাঁইত্রিশ বছর বয়সে তাঁর জীবনাবসান ঘটে। তবু বাঙালির মন ও মানসে তিনি চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন।