![]() |
বাঙালির ক্রীড়াসংস্কৃতিতে নগেন্দ্রপ্রসাদ সর্বাধিকারীর ভূমিকা আলোচনা করো। |
ভারতীয় ফুটবলের সূচনাকার হিসেবে নগেন্দ্রপ্রসাদ সর্বাধিকারী চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন।
বাংলায় ফুটবল খেলার সূত্রপাত ও নগেন্দ্রপ্রসাদ
উনিশ শতকে বাংলায় নবজাগরণের যে-ঢেউ আছড়ে পড়েছিল তা যেমন সমাজ-সাহিত্য-চিত্রকলা সহ বিবিধ সাংস্কৃতিক অঙ্গনে প্রত্যক্ষ করা গিয়েছিল, ঠিক তেমনি বাংলার ফুটবল ও ক্রিকেটেও এক নতুন ভাবাবেগ লক্ষ করা গিয়েছিল। বাংলার ক্রীড়াক্ষেত্রে আধুনিক ঐতিহ্যের সূত্রপাত ঘটে এই সমস্ত পাশ্চাত্য খেলাগুলির হাত ধরেই। ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বাংলা তথা ভারতে ফুটবল খেলা এবং ফুটবল ক্লাব প্রতিষ্ঠিত হলেও, তা ছিল সম্পূর্ণরূপে বিদেশিদের ফুটবল। কিন্তু ভারতীয় ফুটবলের প্রকৃত যাত্রা শুরু হয় ১৮৭৭ খ্রিস্টাব্দে। এই সময় এক ভোরে বালক নগেন্দ্রপ্রসাদ ঘোড়ার গাড়িতে করে গঙ্গার দিকে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ সেইসময় তাঁদের ঘোড়ার গাড়ির সামনে একটা চামড়ার গোলাকার বস্তু এসে পড়ে এবং নগেন্দ্রপ্রসাদ সেটি সজোরে লাথি মেরে ইংরেজদের কাছে পাঠিয়ে দেন। ইতিহাস বলে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই বাংলা তথা ভারতে ফুটবলের সূত্রপাত।
বাংলায় ফুটবল প্রসারে নগেন্দ্রনাথের কৃতিত্ব
এরপর হেয়ার স্কুল ও প্রেসিডেন্সিতে পড়ার সময় তিনি একক উদ্যোগে ফুটবল দল গড়ে তোলেন। সেন্টার ফরোয়ার্ড এই খেলোয়াড়টির প্রচেষ্টায় একদিকে যেমন কলকাতায় ফ্রেন্ডস ক্লাব, বয়েজ ক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, অন্যদিকে তেমনি জেলায় জেলায় ফুটবল খেলার প্রসার হয়েছিল। ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে নগেন্দ্রপ্রসাদ কলকাতায় বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। তাঁর ‘শোভাবাজার ক্লাব’, ১৮৯২ খ্রিস্টাব্দে ট্রেডস কাপে অংশ নেয় এবং চ্যাম্পিয়ন হয়। ১৮৯৩-এ আই এফ এ শিল্ডে অংশ নেওয়া ছাড়া, ইস্টশায়ারের মতো দলকেও তারা হারিয়েছিল। দর্শক ও খেলোয়াড়দের কাছে নগেন্দ্রপ্রসাদ হুজুর নামে পরিচিত ছিলেন। তিনি ফুটবল ছাড়া ক্রিকেট, হকি এবং টেনিস খেলাতেও যথেষ্ট দক্ষ ও পারদর্শী ছিলেন।