![]() |
ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামে সুভাষচন্দ্র বসুর অবদান পর্যালোচনা করো। |
ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামে সুভাষচন্দ্র বসুর অবদান
রাজনৈতিক জীবনের সূচনা ও ফরওয়ার্ড ব্লক দল গঠন: ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দের ২৩ জানুয়ারি উড়িষ্যার কটক শহরে সুভাষচন্দ্র বসুর জন্ম হয়। লোভনীয় ব্রিটিশ সরকারি চাকুরি (ICS) ছেড়ে তিনি ভারতীয় রাজনীতিতে যোগ দেন এবং ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে জাতীয় কংগ্রেসের হরিপুরা ও ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দে ত্রিপুরি অধিবেশনে সভাপতির পদ লাভ করেন। ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দে গান্ধিজির সঙ্গে মনোমালিন্যের কারণে কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে এসে বামপন্থীদের নিয়ে গঠন করেন ফরওয়ার্ড ব্লক।
দেশত্যাগ: ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দের ভারতরক্ষা আইনে ব্রিটিশ সরকার সুভাষচন্দ্র বসুকে গ্রেফতার ও বন্দি করে। কিন্তু তিনি ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দের ১৭ জানুয়ারি ছদ্মবেশে গৃহত্যাগ করেন এবং জার্মানিতে পৌঁছে বন্দি ভারতীয় সেনাদের নিয়ে ফ্রি ইন্ডিয়ান লিজিয়ন নামে একটি সেনাদল গঠন করেন। এখানে সুভাষচন্দ্র নেতাজি বলে খ্যাত হন।
আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠন: এরপর নেতাজি জার্মানি থেকে সমুদ্রপথে জাপানে আসেন। সেখানে রাসবিহারী বসু ও ক্যাপটেন মোহন সিং জাপানের হাতে বন্দি ভারতীয় সৈনিকদের নিয়ে একটি সেনাবাহিনী গঠন করেছিলেন, যার দায়িত্ব তাঁরা সুভাষচন্দ্র বসুর হাতে তুলে দেন। ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে সুভাষচন্দ্র এই বাহিনীর নাম দেন আজাদ হিন্দ ফৌজ।
ভারত অভিযান: এরপর সুভাষচন্দ্র বসুর নেতৃত্বে আজাদ হিন্দ বাহিনী ভারতের মাটিতে পা রাখে। সেখানে নেতাজি সেনাদের সামনে ডাক দেন “জয় হিন্দ, দিল্লি চলো”, “তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব।” এই সেনাদল ভারতের প্রায় ১৫০ মাইল এলাকা ব্রিটিশ শাসনমুক্ত করেছিল। শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপান মিত্রশক্তির কাছে আত্মসমর্পণ করলে ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দের আগস্টে আজাদ হিন্দ ফৌজও আত্মসমর্পণ করে। এরপর নেতাজির ইতিহাস রহস্যের আড়ালে আবৃত।