![]() |
ভারতে রেলপথ প্রবর্তনের উদ্দেশ্য আলোচনা করো। |
ভারতে রেলপথ প্রবর্তনের উদ্দেশ্যসমূহ
সামরিক কারণ: ভারতের দূরবর্তী স্থানে দ্রুত সেনাবাহিনী প্রেরণ এবং সৈন্যদের প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী, রসদ ও অর্থ প্রেরণের জন্য রেলপথ স্থাপন ছিল অপরিহার্য।
যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন: যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিসাধন করে বাণিজ্যের সম্প্রসারণ ও বিকাশ ঘটানো ছিল রেলপথ স্থাপনের অন্যতম উদ্দেশ্য।
কাঁচামাল প্রেরণ: রেল পরিবহণের মাধ্যমে দেশের কাঁচামাল বিভিন্ন বন্দরে পৌঁছে দেওয়া ছিল রেলপথ স্থাপনের আর-একটি উদ্দেশ্য।
ব্রিটেনের পণ্য ভারতের নানা স্থানে প্রেরণ: ইংল্যান্ডের কারখানায় উৎপাদিত শিল্পসামগ্রী অতি সহজে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে পৌঁছে দেওয়াও রেলপথ স্থাপনের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল।
বিদ্রোহ দমন ও যুদ্ধবিগ্রহের সময় রেলের ব্যবহার: দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন বিদ্রোহের দমন এবং যুদ্ধকালে সৈন্যবাহিনীর কাছে খাদ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম প্রেরণ প্রভৃতি কাজে দ্রুতগামী রেলপথ ব্যবস্থার প্রয়োজন দেখা দেয়।
প্রশাসনিক উদ্দেশ্য: ভারতে বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে কার্যকরী ব্রিটিশ প্রশাসন বজায় রাখার জন্যও রেলপথের মতো আধুনিক পরিবহণ ব্যবস্থার প্রয়োজন ছিল।
জরুরি পরিস্থিতির মোকাবিলা: দুর্ভিক্ষ, মহামারি বা প্রাকৃতিক বিপর্যয় প্রভৃতি জরুরি পরিস্থিতিকালীন সময়ে যথাবিহিত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য রেল পরিবহণ খুবই আবশ্যিক ছিল।
ব্রিটেনের শিল্পকাঠামোর উন্নয়ন: রেলপথের মাধ্যমে শিল্প পরিকাঠামো গঠন করে ব্রিটিশ পুঁজিপতিদের উদ্যোগকে স্বাগত জানানো হয়েছিল। এর দ্বারা ব্রিটেনের শিল্পকাঠামোকে উন্নত করে তোলা হয়েছিল।
ব্রিটিশ পুঁজির বিনিয়োগ: ইংল্যান্ডে শিল্পবিপ্লবের ফলে প্রচুর সঞ্চিত উদ্বৃত্ত পুঁজি ব্রিটিশ শিল্পপতিরা নিরাপদ ও লাভজনক বাণিজ্যে বিনিয়োগ করার জন্য উদ্গ্রীব ছিল। তারা এক্ষেত্রে ভারতের রেলপথ নির্মাণকে বেছে নেয়।
মুনাফা অর্জন: ভারতে রেলপথ ব্যবস্থা চালু হলে ইঞ্জিন, মালগাড়ি ও রেলপথের সরঞ্জাম বিক্রি করে প্রচুর পরিমাণ মুনাফা অর্জন করতে পারবে বলে মনে করে ব্রিটিশ পুঁজিপতিরা।
ইংরেজদের অর্থকরী স্বার্থ : ভারতে রেলপথ স্থাপনের উদ্যোগ বহু ইংরেজ ধনপতিকে তাদের উদ্বৃত্ত সম্পদ লগ্নি করার সুযোগ করে দেয়। একইসঙ্গে রেলপথ স্থাপনের কাজে ভারতে বহু ইংরেজের কর্মসংস্থান হয়।