ভারত ছাড়ো’ আন্দোলন পর্বে কৃষক আন্দোলনের বিবরণ দাও – ১৯৪২ সালে ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলন শুরু হলে বাংলা, বিহার, উড়িষ্যা, আসাম উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, মাদ্রাজ, মহারাষ্ট্র, অন্ধ্র, গুজরাট, কেরালা প্রভৃতি স্থানের সর্বস্তরের কৃষকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
তো চলুন আজকের মূল বিষয় ভারত ছাড়ো’ আন্দোলন পর্বে কৃষক আন্দোলনের বিবরণ দাও পড়ে নেওয়া যাক।
ভারত ছাড়ো’ আন্দোলন পর্বে কৃষক আন্দোলনের বিবরণ দাও
![]() |
ভারত ছাড়ো’ আন্দোলন পর্বে কৃষক আন্দোলনের বিবরণ দাও |
ভারত ছাড়ো আন্দোলন পর্বে কৃষক আন্দোলনের বিবরণ
১৯৪২ সালে ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলন শুরু হলে বাংলা, বিহার, উড়িষ্যা, আসাম উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, মাদ্রাজ, মহারাষ্ট্র, অন্ধ্র, গুজরাট, কেরালা প্রভৃতি স্থানের সর্বস্তরের কৃষকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ভূমিহীন দরিদ্র কৃষক, ক্ষেত মজুর, ধনী কৃষক ও জমিদাররা হাতে হাত মিলিয়ে সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়।
- বিহারে কৃষকরাই ছিল আন্দোলনের প্রধান শক্তি। বিহারের পালামৌ জেলায় কৃষকরা যদুবংশ সাহারের নেতৃত্বে সংগঠিত হয়। কাটিহারে তালেবর সারার শত শত সাঁওতালকে ঐক্যবদ্ধ করেন। হাজারিবাগ, ভাগলপুর ও ভোজপুরে ব্যাপক বিদ্রোহ দেখা দেয়। এম. হারকোর্ট-এর মতে, ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলন ছিল মূলত কৃষক বিদ্রোহ, যার নেতৃত্বে ছিল শহরের মধ্যবিত্ত।
- উড়িষ্যার বালেশ্বর, কটক, কোরাপুর, তালচেরে ব্যাপক গণ-অভ্যুত্থান ঘটে যায়। কোরাপুটে লক্ষ্মণ নায়েকের নেতৃত্বে উপজাতি কৃষকরা জয়পুর-এর রাজার সংরক্ষিত অরণ্য ধ্বংস করে থানা আক্রমণ করে। তালচেরে “চাষি-মল্লা” রাজ গঠিত হয়। বালেশ্বরে পাঁচ হাজার কৃষক থানা অভিযান করে।
- বোম্বাই-এর গ্রামাঞ্চলে কৃষকদের মধ্যে গেরিলা তৎপরতা লক্ষ করা যায়। বোম্বাই-এর খান্দেশ ও সাতারা-য় ব্যাপক কৃষক বিদ্রোহ দেখা দেয়। দারিদ্র কুনবি কৃষকরা এই আন্দোলনে যোগ দেয়।
- গুজরাটের ব্রোচ জেলায় ব্যাপক কৃষক আন্দোলন দেখা দেয়। বহু স্থানে শুরু হয় খাজনা বন্ধ আন্দোলন। বরোদায় প্রজামণ্ডল গঠিত হয়।
- বাংলার মেদিনীপুর, হুগলি, বীরভূম, ফরিদপুরের কৃষকরা ব্যাপকভাবে এই আন্দোলনে যোগ দেয়। বীরভূম ও দিনাজপুরের সাঁওতালদের ভূমিকা ছিল চোখে পড়ার মতো। মেদিনীপুরের তমলুক মহকুমা ও কাঁথি মহকুমার পটাশপুর ও খেজুরির ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য। আগস্ট আন্দোলনের কালে কৃষকরা জমিদারের বিরুদ্ধে কোনো সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়নি। যে-সব জমিদার ইংরেজ-পক্ষ অবলম্বন করেছিল কৃষকরা কেবলমাত্র তাদের ওপরেই আক্রমণ চালায়। ম্যাক্স হারকোর্ট-এর মতে এই আন্দোলন ছিল মূলত কৃষক বিদ্রোহ-জাতীয় বিদ্রোহ নয়। অপরপক্ষে, স্টিফেন হেনিংহ্যাম (S. Henningham) বলেন যে, জাতীয় কংগ্রেসের অন্তর্ভুক্ত উচ্চবর্গ এবং বর্ণের ধনী কৃষক ও জমিদাররা প্রথমে এই আন্দোলন গড়ে তোলেন। পরে নিম্নবর্গ ও বর্ণের দরিদ্র কৃষকেরা আন্দোলনে যোগদান করে।
আপনি আমাদের একজন মূল্যবান পাঠক। ভারত ছাড়ো’ আন্দোলন পর্বে কৃষক আন্দোলনের বিবরণ দাও -এই বিষয়ে আমাদের লেখনী সম্পূর্ণ পড়ার জন্যে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার মতামত জানাতে ভুলবেন না।