ভূমিকা
অসামান্য প্রতিভায় কবিগুরু বাংলা সাহিত্যকে বিশ্বের দরবারে গৌরবের আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। শুধু কাব্য, গল্প, উপন্যাস নয়- চিত্রকলা, সংগীত, ভাষাতত্ত্ব, রাজনীতি এবং শিক্ষাঙ্গনের ক্ষেত্রেও তাঁর অবদান অসামান্য।
ভাষা
‘শব্দতত্ত্ব’ সম্বন্ধে রবীন্দ্রনাথ যে গবেষণা করেছেন, তার গভীরতা পণ্ডিতদের নির্বাক করে দিয়েছে। ‘শব্দতত্ত্ব’ ১৯০৯ সালে প্রকাশিত রবীন্দ্রগ্রন্থ। তিনি মাতৃভাষা বাংলাকে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন। বাংলা ভাষার রূপ ও প্রকৃতি, অবয়ব এবং তার অন্তরের শক্তি অবলোকন ও অনুসন্ধানেই ছিল তাঁর নিরন্তর আগ্রহ। রবীন্দ্রনাথ জোর দিয়েছিলেন পারিভাষিক শব্দের প্রকাশ ও যথার্থতার উপর।
রাজনীতি
রবীন্দ্রনাথের রাজনৈতিক চিন্তাধারায় দেখা যায়, তিনি সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতা করে এসেছেন- সেইসঙ্গে ভারতীয় জাতীয়তাবাদীদের সমর্থন করেছেন। রবীন্দ্রনাথের ‘মানসী’ কাব্যে রাজনৈতিক ও সামাজিক চিন্তাভাবনার পরিচয় পাওয়া যায়। বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন, স্বদেশি আন্দোলন ইত্যাদির নানা ভাবনা তাঁর গ্রন্থে ও কর্মে উঠে এসেছে। রাখিবন্ধন, নাইট উপাধি পরিত্যাগও সে-কথা মনে করিয়ে দেয়। তিনি ভারতবাসীকে অন্ধ বিপ্লবের পথ ত্যাগ করে বাস্তবসম্মত উপযোগমূলক শিক্ষার পথটিকে গ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
শিক্ষা
শান্তিনিকেতন রবীন্দ্রনাথের কাছে স্বর্গ। সেখানে তিনি ব্রহ্মচর্যাশ্রম বিদ্যালয় স্থাপন করেন। ১৯২১ সালে সেই বিদ্যালয় হয়ে – উঠল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। তাঁর মনে হয়েছিল, ইংরেজ প্রবর্তিত – শিক্ষাব্যবস্থা ভারতীয় জীবনধারা, সমাজ ও সংস্কৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন। তিনি – বিশ্বাসী ছিলেন প্রাকৃতিক পরিবেশে শিশুদের বেড়ে ওঠায়। তিনি সারা বিশ্বের সঙ্গে যোগসূত্র বজায় রেখে ভারমুস্ত শিক্ষাঙ্গন তৈরি করতে সচেষ্ট হয়েছিলেন। তাই লেখকের বিশ্বাস, শান্তিনিকেতনের স্নিগ্ধচ্ছায়ায় বিশ্বজন একদিন সুখময় নীড় লাভ করবে।