মোগল প্রশাসনিক ব্যবস্থায় মনসবদারি প্রথার গুরুত্ব লেখো

মোগল প্রশাসনিক ব্যবস্থায় মনসবদারি প্রথার গুরুত্ব লেখো

মোগল প্রশাসনিক ব্যবস্থায় মনসবদারি প্রথার গুরুত্ব লেখো
মোগল প্রশাসনিক ব্যবস্থায় মনসবদারি প্রথার গুরুত্ব লেখো

ভূমিকা

সম্রাট আকবরের প্রশাসনিক সংস্কারগুলির মধ্যে সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য ছিল মনসবদারি প্রথার প্রবর্তন। তাঁর এই প্রথা প্রবর্তনের মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল সামরিক ও অসামরিক প্রশাসনকে সুসংগঠিত করা। মোগল প্রশাসনিক ব্যবস্থায় এই প্রথার কতকগুলি গুরুত্ব ছিল। সেগুলি হল-

(1) দক্ষ প্রশাসনিক ব্যবস্থা গঠন: আকবর মনসবদারি প্রথা প্রবর্তনের মধ্য দিয়ে মোগল অভিজাত ও সৈন্যবাহিনীকে সুসংগঠিত করেছিলেন। তা ছাড়া মনসবদারদের নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্যতাই ছিল একমাত্র মাপকাঠি। ফলস্বরূপ একটি দুর্নীতিমুক্ত ও দক্ষ প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছিল।

(2) বিশাল সৈন্যবাহিনী গঠন: প্রত্যেক মনসবদারকেই পদাতিক ও অশ্বারোহী সৈন্যপোষণ করতে হত। তাই এই প্রথা প্রবর্তনের মধ্যে দিয়ে আকবর অল্প সময়ে একটি বিশাল ও শক্তিশালী সৈন্যদল গঠন করতে পেরেছিলেন। ফলে সাম্রাজ্যের নিরাপত্তা বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছিল।

(3) সম্রাটের সামরিক শক্তি বৃদ্ধি: মনসবদাররা যুদ্ধের সময় সৈন্যবাহিনী দিয়ে সম্রাটকে সাহায্য করতে বাধ্য থাকতেন। ফলে সামরিক ক্ষেত্রে সম্রাটের শক্তি ও ক্ষমতা বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছিল।

(4) মোগল-রাজপুত মৈত্রী প্রতিষ্ঠা: আকবর তাঁর একান্ত  বিশ্বাসভাজন মানসিংহ, টোডরমল প্রমুখ রাজুপতদের উচ্চ মনসব দিয়ে সম্মানিত করেছিলেন। ফলে রাজপুতদের সঙ্গে মোগলদের দীর্ঘকালীন শত্রুতার অবসান ঘটে এবং মোগল-রাজপুত মৈত্রী সুদৃঢ় হয়।

(5) প্রশাসনের ভারসাম্য রক্ষা: আকবরের সময় থেকেই তুর্কি, উজবেগ, পারসিক, আফগান, রাজপুত প্রভৃতি জাতিভিত্তিক মনসবদারি ব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল। তাদের মধ্যে পারস্পরিক ঈর্ষা ও সন্দেহ থাকায় তাঁরা সম্মিলিতভাবে সম্রাটের বিরোধিতা করতে পারতেন না। তা ছাড়া সম্রাট এক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আর-এক গোষ্ঠীকে কাজে লাগিয়েও প্রশাসনিক ভারসাম্য রক্ষা করতেন।

আরও পড়ুন – নুন কবিতার বড় প্রশ্ন উত্তর

Leave a Comment