সাম্যবাদী কবিতার বিষয়বস্তু আলোচনা করো

সাম্যবাদী কবিতার বিষয়বস্তু আলোচনা করো

সাম্যবাদী কবিতার বিষয়বস্তু আলোচনা করো
সাম্যবাদী কবিতার বিষয়বস্তু

সাম্যবাদী কবিতার বিষয়বস্তু

‘সাম্যবাদী’ কবিতায় কবি নজরুল জাতিধর্মবর্ণনির্বিশেষে সকলকে সাম্যবাদের মহান মন্ত্রে দীক্ষিত করতে চেয়েছেন। বিশ্ববাসী নানা ধর্মে, বর্ণে, বিশ্বাসে, আর্দশে বিভক্ত হলেও সাম্যবাদের ধারণায় সকলেই এক ও অভিন্ন। হিন্দু-মুসলমান-খ্রিস্টান, পারসি-সাঁওতাল-গারো কোনো ক্ষেত্রেই কোনো প্রভেদ নেই। তাই বেদবেদান্ত, কোরান-জেন্দাবেস্তাসহ যে ধর্মগ্রন্থই পাঠ করা হোক-না-কেন, তা বৃথা পণ্ডশ্রম ছাড়া আর কিছুই নয়। আসলে মানুষের হৃদয়ই দেবতার নিত্য অধিষ্ঠানভূমি।

সকল শাস্ত্রের মূলকথাই মানবহৃদয়ে যুগযুগান্ত ধরে ধ্বনিত হয়ে আসছে। মন্দির-মসজিদ-গির্জায় নয়, মানবহৃদয়েই ঈশ্বর আবির্ভূত হন। মানবহৃদয়ের এই গৌরবের কাছে সমস্ত রাজ-ঐশর্যও ম্লান হয়ে যায়। কাশী, বৃন্দাবন, মথুরা, জেরুজালেম, মদিনা প্রভৃতি পবিত্র স্থানের মাহাত্ম্যও খুঁজে পাওয়া যায় প্রেমপ্রীতি-ভালোবাসায় সিক্ত মানবহৃদয়ে। ঈশা, মুসা প্রমুখ মহাত্মাগণ আপন অন্তরে দেবতাকে অনুভব করে মানবাত্মার সুমহান সত্যকে উপলব্ধি করেছেন।

যুদ্ধে উন্মত্ত রণভূমিতে দাঁড়িয়েই ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কণ্ঠে গীতার ‘মহা-বাণী’ উচ্চারিত হয়েছিল, এই হৃদয়ের ধ্যানগুহাতে বসেই শাক্যমুনি অসহায় মানুষের আর্তনাদ শুনে রাজমুকুট পরিত্যাগ করে মহানিষ্ক্রমণের পথে এগিয়ে গিয়েছিলেন। আর মেষের রাখাল নবিরাও খোদার সঙ্গী সাথি হয়েছেন। আরব দুলাল হজরত মোহম্মদও হৃদয় কন্দরের উপলব্ধিজাত সত্যের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েই ‘কোরানের সাম-গান’ উচ্চারণ করেছেন। তাই মানবহৃদয়ই সাধনার সর্বশ্রেষ্ঠ পীঠ, উপাসনার শ্রেষ্ঠ মন্দির।

আরও পড়ুন – বিড়াল প্রবন্ধের বিষয়বস্তু ও নামকরণ

Leave a Comment