সুন্দরবন অঞ্চলের ভূপ্রকৃতি, নদনদী ও জলবায়ুর বর্ণনা দাও

সুন্দরবন অঞ্চলের ভূপ্রকৃতি, নদনদী ও জলবায়ুর বর্ণনা দাও
সুন্দরবন অঞ্চলের ভূপ্রকৃতি, নদনদী ও জলবায়ুর বর্ণনা দাও।

ভূপ্রকৃতি

গঙ্গা ও তার বিভিন্ন শাখানদী, যেমন জলঙ্গী, চূর্ণি, ইছামতী প্রভৃতি এবং সমুদ্রের মিলিত সঞ্চয়কার্যের ফলে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণে সুন্দরবন অঞ্চলটি গড়ে উঠেছে। এখানকার ভূপ্রকৃতির বৈশিষ্ট্যগুলি হল- সমগ্র অঞ্চলটি সক্রিয় বদ্বীপ অঞ্চলের অন্তর্গত পলিগঠিত নিম্ন সমতলভূমি। কোথাও উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে 5 মিটারের বেশি নয়। বিভিন্ন নদীর বয়ে আনা পলি সঞ্চিত হয়ে এখানে অসংখ্য ছোটোবড়ো দ্বীপ গঠন করেছে। এগুলির মধ্যে বাসন্তী, সজনেখালি, সাগরদ্বীপ, ডালহৌসি, লোথিয়ান, গোসাবা, পূর্বাশা প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। এই অঞ্চলে এখনও ক্রমাগত নতুন নতুন দ্বীপের গঠনকার্য চলছে।

নদনদী

সুন্দরবন অঞ্চলে অসংখ্য নদী প্রবাহিত হয়েছে। এখানকার নদীগুলির মধ্যে হাড়িয়াভাঙা, মাতলা, সপ্তমুখী, গোসাবা, ঠাকুরান, রায়মঙ্গল, কালিন্দী, জামিরা, ইছামতী ইত্যাদি প্রধান।

বৈশিষ্ট্য

  • প্রায় সব নদীই একসময়ে ভাগীরথী-হুগলির শাখা ছিল। 
  • নদীগুলি উৎসের দিকে পলি জমার ফলে মজে গেছে। 
  • বর্তমানে উৎস থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নদীগুলি সমুদ্রের লবণাক্ত জলে পূর্ণ খাঁড়িতে পরিণত হয়েছে। 
  • এরা প্রত্যেকেই উত্তর দিক থেকে দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে। 
  • নদীগুলি জোয়ারের জলে পুষ্ট। 
  • নদীগুলি মোহানা বা খাঁড়ি অঞ্চলে বেশ চওড়া।

জলবায়ু

সুন্দরবন অঞ্চলের জলবায়ু সমভাবাপন্ন প্রকৃতির। এখানকার জলবায়ুর বৈশিষ্ট্যগুলি হল –

উষ্ণতা:
গ্রীষ্মকালে এখানকার গড় তাপমাত্রা থাকে প্রায় 25°C – 30°C এবং শীতকালে গড় তাপমাত্রা প্রায় 12°C 18°C

বৃষ্টিপাত : এই অঞ্চলের বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত 175 – 200 সেমি। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ বর্ষাকালে এবং গ্রীষ্মকালে বেশি থাকে। এখানে গ্রীষ্মকালে কালবৈশাখী ও শরৎকালে আশ্বিনের ঝড়ের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। এ ছাড়া বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের ফলে এখানে মাঝে মাঝে ঘূর্ণিঝড় হয়ে থাকে।

Leave a Comment