![]() |
সুলতানি যুগে ভারতে সুফিবাদের প্রভাব কীরূপ ছিল |
সুফিবাদ ভারতীয়দের জনজীবনে গভীর প্রভাব বিস্তার করে। সুলতানি যুগের সুফি আন্দোলনের প্রভাব সম্পর্কে নীচে আলোচনা করা হল-
ঐক্যবদ্ধ সমাজ গঠন
- সুফিদের সহজ-সরল জীবনযাত্রা, নীতিবোধ ও সাম্য চেতনা সমাজের সকল স্তরের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে উদ্বুদ্ধ করে।
- শিক্ষার বিকাশ: শিক্ষার বিকাশে সুফিবাদের অবদান ছিল অপরিসীম। সুফিবাদের খানকাগুলি বিদ্যাচর্চা ও জ্ঞান অর্জনের বিশেষ কেন্দ্র ছিল।
- ভক্তিবাদের বিকাশ: সুফিবাদ ভক্তিবাদের বিকাশকে ত্বরান্বিত করেছিল। কারণ সুফিবাদের উদারনৈতিক মনোভাব ও ঈশ্বর সাধনার পথ ভক্তিবাদের উপর প্রভাব ফেলে।
- সহনশীলতার আদর্শ: সুফিবাদের সহনশীল ধর্মনীতি বহু হিন্দুকে ইসলাম ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট করে। ফলে সামাজিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে সহাবস্থানের প্রেক্ষাপট তৈরি হয়।
- জাতপাতের শৃঙ্খলমোচন: সমাজের নীচু ও অবহেলিত মানুষদের কাছে সুফিবাদ ছিল মুক্তির মন্ত্র। কেন-না, সুফিবাদের বাণীগুলি সমাজের নিম্নশ্রেণির মানুষদের জাতপাত ও ভেদাভেদের বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে আসার পথ দেখায়।
- ইসলামের ভারতীয়করণ: সুফি সাধকরা ইসলামের ভারতীয়করণ করেন। বহু মুসলিম শাসক সুফিবাদের সংস্পর্শে এসে ধর্মক্ষেত্রে সহনশীলতার নীতি গ্রহণ করেন। যেমন- আকবরের সুল-ই-কুল নীতি।
- হিন্দি ভাষার সমৃদ্ধি: সুফি সাধকরা তাঁদের ধর্মের বাণী হিন্দি ভাষায় জনগণের কাছে প্রচার করতেন। ফলে হিন্দি ভাষায় অসংখ্য গ্রন্থ রচিত হয় এবং হিন্দি ভাষার গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পায়।
উপসংহার
সুফিবাদ ভারতীয় সমাজব্যবস্থা ও জনজীবনে গভীর প্রভাব ফেলেছিল। সুফিবাদের প্রভাবে তৎকালীন ভারতবর্ষে সবচেয়ে যুগান্তকারী ফলশ্রুতি ছিল হিন্দু-মুসলিম ঐক্য।