![]() |
হলদিয়া বন্দর গড়ে ওঠার কারণগুলি আলোচনা করো। |
কলকাতা বন্দরকে সহযোগিতা করা: বর্তমানে হুগলি নদীতে জলের পরিমাণ কমে গিয়ে এবং অধিক পলি সঞ্চিত হয়ে নাব্যতা হ্রাস পাওয়ায় সমুদ্রগামী বড়ো বড়ো জাহাজ কলকাতা বন্দরে প্রবেশ করতে পারে না। তাই, কলকাতা বন্দরের সহায়ক বন্দর হিসেবে হলদিয়া বন্দর গড়ে তোলা হয়েছে।
সুরক্ষিত পোতাশ্রয় : হলদিয়া বন্দরের পোতাশ্রয়টি বোতল আকৃতিযুক্ত হওয়ায় এটি ঝড়-ঝঞ্ঝার হাত থেকে সুরক্ষিত।
গভীর জলরাশি : হলদিয়া বন্দর অঞ্চলে জলের গভীরতা 10 মিটারের মতো হওয়ায় বড়ো বড়ো জাহাজ সহজেই চলাচল করতে পারে।
সরল নদীপথ: হলদিয়া বন্দরে প্রবেশপথে বাঁক বিশেষ নেই বলে সরল পথে জাহাজ সহজে যাতায়াত করতে পারে।
জমির সহজলভ্যতা: বন্দরের পরিকাঠামো গড়ে তোলার জন্য এখানে প্রয়োজনীয় জমি বেশ সহজলভ্য।
বন্দরের উন্নত পশ্চাদ্ভূমি: কলকাতা বন্দরের পশ্চাদ্ভূমিই হল হলদিয়া বন্দরের পশ্চাদ্ভূমি। আর এই পশ্চাদ্ভূমি হল ভারতের সবচেয়ে জনবহুল এবং অন্যতম শ্রেষ্ঠ শিল্পোন্নত অঞ্চল।
উন্নত পরিবহণ ব্যবস্থা: কলকাতা থেকে হলদিয়া বন্দরের দূরত্ব কম হওয়ায় বড়ো বড়ো জাহাজ হলদিয়া বন্দরেই তাদের পণ্যদ্রব্য খালাস করে। আবার সড়ক (41 নং ও 6 নং জাতীয় সড়ক) ও রেলপথে (দক্ষিণ-পূর্ব) কলকাতা থেকে হলদিয়ায় পণ্যদ্রব্য এনে বিদেশে রপ্তানি করা হয়।
বন্দরকেন্দ্রিক শিল্পাঞ্চল : হলদিয়া ভারতের সর্বপ্রথম বন্দরকেন্দ্রিক শিল্পাঞ্চল। তাই এই বন্দরের দ্রুত উন্নতি ঘটছে।
সুলভ শিল্পজাত কাঁচামাল : হলদিয়া বন্দরের নিকটবর্তী ঝাড়খণ্ড, ওড়িশার লৌহ আকরিক, রানিগঞ্জ ও ঝরিয়ার কয়লা, ওড়িশার চুনাপাথর ও ম্যাঙ্গানিজ সমুদ্রপথে বিদেশে রপ্তানি করা হয়। আবার নিকটবর্তী হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যাল ও অন্যান্য শিল্পের কাঁচামাল বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়।
আধুনিক উন্নত ব্যবস্থা: জাহাজে মাল ওঠানো-নামানোর জন্য কন্টেনার সার্ভিস-সহ যান্ত্রিক পরিসেবা ব্যবস্থা থাকায় কম সময়ে, কম খরচে এবং কম শ্রমিকের সাহায্যে পণ্যদ্রব্য ওঠানো নামানো যায়।
সরকারি আনুকূল্য: হলদিয়া বন্দর গড়ে তোলার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের যৌথ প্রয়াস বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।