![]() |
হিটলারের অভ্যন্তরীণ নীতিগুলি কী ছিল? |
ক্ষমতা দখলের পর হিটলার জার্মানির অভ্যন্তরীণ পুনর্গঠনের কাজে হাত দেন।
একনায়কতকন্ত্র প্রতিষ্ঠা
একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রাদেশিক সরকারগুলির স্বায়ত্তশাসন বাতিল করে শাসনতন্ত্রের নাতসিকরণ করা হয়। নাতসিদলে দল নেতার নির্দেশের বিরুদ্ধে কোনো প্রশ্ন করা যেত না। কারণ তিনি ছিলেন অভ্রান্ত (Infallible)। নাতসিবাদই একমাত্র সঠিক মতবাদ এবং অন্য সবই ভ্রান্ত। এভাবেই তিনি জার্মানিকে একনায়কতন্ত্রের আঁতুরঘর বানিয়েছিলেন।
বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করা
১৪ জুলাই ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দে এক আইন জারি করে সমস্ত রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। নাতসি দলকে একমাত্র বৈধ রাজনৈতিক দলের মর্যাদা দেওয়া হয়। অমানবিক দমন পীড়ন দ্বারা হিটলার সমস্ত বিরোধী নেতা বা বিরোধী মতের কণ্ঠরোধ করেন।
ইহুদি বিতাড়ন
হিটলার প্রচণ্ড ইহুদি বিদ্বেষী ছিলেন। অকারণে ইহুদিদের হত্যা বা নির্যাতন করা হত। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইহুদিদের বিতাড়ন করা হয়। ইহুদি হওয়ার কারণে বিশ্ব বিখ্যাত বিজ্ঞানী আইনস্টাইনকেও জার্মান থেকে বিতাড়িত হতে হয়েছিল।
শক্তিশালী সেনাবাহিনী গঠন
নিজের অভিষ্ঠ লক্ষ্য পূরণ করার জন্য হিটলার শক্তিশালী সেনাবাহিনী গঠন করেন। বেকার যুবকদের সেনাবাহিনীতে নিয়োগ করে আধা সামরিক ঝটিকাবাহিনী গঠন করা হয়।
বাধ্যতামূলক সামরিক শিক্ষা
প্রয়োজনে পর্যাপ্ত পরিমাণে সেনা পেতে যাতে অসুবিধা না হয়, তাই জার্মানিতে বাধ্যতামূলক সামরিক শিক্ষা চালু করা হয়।
কৃষি ও শিল্প সংস্কার
ক্ষমতা লাভ করেই হিটলার অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য কৃষি ও শিল্পে বিশেষ নজর দেন। সমস্ত জলাভূমিকে চাষযোগ্য করে তোলা হয়, জমিতে সার প্রয়োগ ও আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার, কৃষি শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্দিষ্ট করে দেওয়ার ফলে মানুষ কৃষি কাজে উৎসাহ পায়। শিল্পের ক্ষেত্রে রপ্তানি বাণিজ্য ও আমদানি শুল্ক বাড়িয়ে দেশীয় শিল্প বিকাশের পথ প্রশস্ত করা হয়।
শিক্ষানীতি
হিটলারের শিক্ষানীতি ছিল নাতসি চিন্তাভিত্তিক, পাঠ্যপুস্তকগুলি নাতসি আদর্শে রচিত হয়। বিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অ-জার্মান এবং ইহুদি শিক্ষকদের বিতাড়িত করা হয়। নাতসিদলের প্রতি আনুগত্য সৃষ্টি করাই ছিল শিক্ষা নীতি মূল উল্লেশ্য।