“আর তাও যে পাব তারও কোনো স্থিরতা নেই”-বক্তা কে? উদ্দিষ্ট ব্যক্তির সংশয়টি কীসের জন্য? তার এই সংশয়ের কারণ কী ছিল?
বক্তা
সমাজসচেতন প্রগতিশীল নাট্যকার বিজন ভট্টাচার্য বিরচিত ‘আগুন’ নাটকে উক্ত উক্তিটির বক্তা হলেন-মধ্যবিত্ত শ্রেণির প্রতিনিধি হরেকৃষ্ণবাবু। তার স্ত্রী মনোরমার সঙ্গে কথার প্রসঙ্গে এই উক্তির অবতারণা।
সংশয় কেন
আকালের পটভূমিতে খাদ্যাভাব চরম আকার নিয়েছিল। তখন চাল-ডাল কখন কীভাবে সংগ্রহ করা যাবে এই নিয়ে সাধারণ মানুষ দ্বিধান্বিত ছিল। তাই হরেকৃষ্ণবাবুর সংশয়টি চালকে কেন্দ্র করেই।
কারণ
ভয়াল-ভয়ংকর পঞ্চাশের মন্বন্তরের পটভূমিতে প্রাকৃতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক দুর্বিপাকে-চারিদিকে শুধুই অন্নের জন্য হাহাকার। এই সংকটময় পরিস্থিতিতে সমাজের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ প্রবল ঝড়ের রাতে হাল ভাঙা, পাল ছেঁড়া নৌকার মতো দিশাহীন।
শুধুমাত্র রাজশক্তি নয়, অন্যান্য সমাজশত্রু, যারা বিদেশি শাসনের সুযোগে নানাভাবে সাধারণ মানুষের উপর শাসন-শোষণ-জুলুম-বঞ্চনা চালিয়েছিল। আর জীবনযন্ত্রণায় ক্ষতবিক্ষত মানুষগুলি প্রাণান্তকর লড়াই জারি রেখেছিল।
একদিকে দুর্ভিক্ষ আর মন্বন্তরের ভয়ংকর আগ্রাসন, অন্যদিকে কালোবাজারি, মুনাফাবাজ, মজুতদারের গগনস্পর্শী অর্থলিপ্সা সংকটকে আরও বর্বরোচিত ও নারকীয় করে তুলেছিল। হরেকৃষ্ণবাবুর উক্তিতে তারই উজ্জ্বল প্রতিফলন-
“দোকানি হয়তো শেষকালে হাত উলটে বলবে-ফুরিয়ে গেছে।… মহা মুশকিলেই পড়া গেল দেখছি।”
আরও পড়ুন – নদীতীরে বালকদের খেলার দৃশ্যটি বর্ণনা করো