প্রাচীন মিশরীয় জাহাজ নির্মাণ প্রযুক্তির পরিচয় দাও

প্রাচীন মিশরীয় জাহাজ নির্মাণ প্রযুক্তির পরিচয় দাও

প্রাচীন মিশরীয় জাহাজ নির্মাণ প্রযুক্তির পরিচয় দাও
প্রাচীন মিশরীয় জাহাজ নির্মাণ প্রযুক্তির পরিচয় দাও

প্রাচীন মিশরীয় জাহাজ নির্মাণ প্রযুক্তি

প্রাচীন কালে মিশরীয়রা জাহাজ তৈরিতে বিশেষ দক্ষতা অর্জন করেছিল। মূলত তারা নীলনদ ও ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে বাণিজ্যের প্রয়োজনে এই জাহাজগুলি ব্যবহার করত।

(1) মিশরীয় জাহাজের বৈশিষ্ট্য:

  • উপকরণ: ফ্যারাওদের আমলে শুকনো কাঠের খণ্ডকে একসঙ্গে বেঁধে জলপথে পরিবহণ ব্যবস্থা মিশরীয়রা প্রথম চালু করেন। তারা একাজে মূলত সিডার ও অ্যাকেশিয়া গাছের কাঠ ব্যবহার করত।
  • আকৃতি: মিশরীয় জাহাজগুলো লম্বা আকৃতির হত। এগুলির দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় ২০-৩০ মিটার।
  • পাল ও বৈঠার সংযোজন: প্রাচীন মিশরীয় জাহাজগুলিতে ত্রিভুজাকার বা আয়তাকার পালের সংখ্যা ছিল এক বা একাধিক। বায়ুর উপর নির্ভর করে পালগুলি জাহাজকে সমুদ্রে এগিয়ে যেতে সাহায্য করত। বায়ু যখন অনুকূলে থাকত না তখন জাহাজ পরিচালনার জন্য বৈঠা ব্যবহার করা হত।
  • মর্চিস ও টেনন পদ্ধতির ব্যবহার: জাহাজ তৈরির সময় কাঠের তক্তাগুলোকে একসঙ্গে জোড়া দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত হত মর্টিস ও টেনন জোড়া (Mortise-Tenon Joint) পদ্ধতি। এতে কাঠের তক্তাগুলোকে শক্তভাবে ধরে রাখা যেত।
  • প্রতীকের ব্যবহার: জাহাজে বিভিন্ন ধর্ম ও রাজার প্রতীক ব্যবহার ছিল তাদের জাহাজ নির্মাণের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।

(2) মিশরীয় জাহাজের উল্লেখযোগ্য নিদর্শন:

  • অ্যাবিডোস নৌকা : The Archaeological Institute of America -এর একটি প্রতিবেদন থেকে প্রাচীন মিশরের অ্যাবিডোস নৌকা (Abydos Boat)-এর বিষয়ে জানা যায়। ডেভিড ও’ কোন্নোর-এর মতে, খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ অব্দে বা তারও পূর্বে এরূপ জাহাজের অস্তিত্ব ছিল। ফ্যারাও খাসেখেমির (Pharaoh Khasekhemwy) সমাধিক্ষেত্রের কাছাকাছি এলাকা থেকে এইরকম ১৪টি জাহাজের অস্তিত্ব মেলে। জাহাজগুলি ছিল প্রায় ৭৫ ফুট লম্বা। তিনি মনে করেন, এরও পূর্বে খ্রিস্টপূর্ব ৫০০০ অব্দে ফ্যারাও আহা / হোর-আহা (Aha/Hor-Aha)-এর সময়েও এই ধরনের জাহাজ তৈরি হত।
  • খুফু জাহাজ: মিশরের চতুর্থ রাজবংশের আমলে নির্মিত গিজার বিখ্যাত পিরামিডের পাদদেশে খোদিত খুফু জাহাজের (Khufu-Ship) চিত্র পাওয়া যায়। আনুমানিক ২৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে খোদিত এই জাহাজটি ছিল ৪৩.৬ মিটার লম্বা।
  • অন্যান্য: খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতকে মিশরের অষ্টাদশ রাজবংশের আমলে এক মাতুল বিশিষ্ট ২৫ মিটার লম্বা এক বিশেষ ধরনের জাহাজের কথা জানা যায়। কোনও কোনও সময় দুই মাণ্ডুলের দুই প্রান্ত একসঙ্গে এক বিন্দুতে মিলিত হয়ে ইরেজি ‘A’ অক্ষরের মতো আকৃতি গঠন করত। তার উপরে চারকোণা একটি পাল থাকত। এই ধরনের জাহাজ চালাতে ব্যবহার করা হত দাঁড় বা বৈঠা।

আরও পড়ুন – নুন কবিতার বড় প্রশ্ন উত্তর

Leave a Comment