পোর্তুগালের সামুদ্রিক অভিযানে আলবুকার্ক ও কেব্রালের উদ্যোগ আলোচনা করো

পোর্তুগালের সামুদ্রিক অভিযানে আলবুকার্ক ও কেব্রালের উদ্যোগ আলোচনা করো

পোর্তুগালের সামুদ্রিক অভিযানে আলবুকার্ক ও কেব্রালের উদ্যোগ আলোচনা করো
পোর্তুগালের সামুদ্রিক অভিযানে আলবুকার্ক ও কেব্রালের উদ্যোগ আলোচনা করো

নৌ-সামুদ্রিক অভিযান ও ভৌগোলিক আবিষ্কারের ইতিহাসে পোর্তুগিজ নাবিক আলবুকার্ক এবং কেব্রালের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

পোর্তুগালের সামুদ্রিক অভিযানে আলফোনসো ডি আলবুকার্কের ভূমিকা

পোর্তুগিজ নাবিক আফোনসো / আলফোনসো ডি আলবুকার্ক (Afonso de Albuquerque, ১৪৫৩-১৫১৫ খ্রিস্টাব্দ) একেবারে প্রাথমিক পর্বে আরবের কিছু স্থানে ও অটোমান তুর্কিদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি নৌ-অভিযানে অগ্রসর হয়েছিলেন। স্ক্রোটা ও হরমুজ দখল করার পর আলবুকার্ক ভারত মহাসাগর এবং ভূমধ্যসাগরের মধ্যেকার বাণিজ্যিক নিয়ন্ত্রণও দখলে আনতে সক্ষম হন। এরপর ১৫১০ খ্রিস্টাব্দে গোয়া দখল করে সেখানে শক্তিশালী পোর্তুগিজ ঘাঁটি স্থাপনে উদ্যত হন তিনি। ১৫১১ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ আলবুকার্কের দখলে আসে মালাক্কাও। ১৫১১ থেকে ১৫১৮ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে দিউ, দমন, সলসেট, বেসিন, মালাক্কা, ক্যাস্টন প্রভৃতি দ্বীপপুঞ্জ পোর্তুগিজদের হস্তগত হয়। এ ছাড়া চিনের সঙ্গেও আলবুকার্ক বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন বলে জানা যায়। বিভিন্ন সময়ে ‘Lion of the Seas’, ‘The Portuguese Mars’, ‘The Terrible’, ‘The Caesar of the East’ -এই সকল অভিধায় ভূষিত হয়েছিলেন আলবুকার্ক।

পোর্তুগালের সামুদ্রিক অভিযানে পেড্রো আলভারেজ কেব্রালের ভূমিকা

প্রথম জীবনে সামরিক ও নৌবাহিনীর সঙ্গে যুক্ত পেড্রো আলভারেজ কেব্রাল (Pedro Alvares Cabral, আনুমানিক ১৪৬৭/১৪৬৮-১৫২০ খ্রিস্টাব্দ) ভৌগোলিক আবিষ্কারের যুগে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছিলেন। পোর্তুগিজ নাবিক কেব্রালকে ১৫০০ খ্রিস্টাব্দে একটু ঘুরপথে ভাস্কো-ডা-গামার গন্তব্য অনুসরণের জন্য পাঠানো হয়। এই অভিযানের পশ্চাতে পোর্তুগালের মূল উদ্দেশ্য ছিল ভারত থেকে মশলা সংগ্রহ এবং সেখানে বাণিজ্যের সম্প্রসারণ করা। মোট ১৩টি জাহাজ নিয়ে কেব্রাল সমুদ্রযাত্রায় উদ্যোগী হন।

কিন্তু পশ্চিমদিকে অনেকটাই বেঁকে অভিযান চালাতে গিয়ে তিনি দক্ষিণ আমেরিকার উত্তর-পূর্ব উপকূলে পৌঁছে যান এবং এই স্থানের নাম দেন ব্রাজিল। ক্রমে এটি পোর্তুগিজ সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়। এখানে ব্যাপক আকারে আখের চাষ করে এবং ইউরোপে চিনি সরবরাহ করে পোর্তুগাল বিপুল মুনাফা অর্জন করে। ওই বছরেই সামুদ্রিক ঝড়ঝঞ্ঝা ও নানান প্রতিকূলতা অতিক্রম করে কেব্রাল ভারতের উদ্দেশে অগ্রসর হন। সেপ্টেম্বর মাস নাগাদ তিনি কালিকট বন্দরে পৌঁছোন। কালিকটে স্থানীয় আরব ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সংঘর্ষের পর কেব্রাল ভারতের কোচিনে এসে উপস্থিত হন এবং স্থাপন করেন পোর্তুগিজ বাণিজ্যকুঠি। স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের সময় ভারত থেকে প্রচুর মশলা নিয়ে ফিরেছিলেন কেব্রাল।

আরও পড়ুন – নুন কবিতার বড় প্রশ্ন উত্তর

Leave a Comment