আমি তোমাকে মাসের মধ্যে পাঁচবার করে বই কিনে দিতে পারি নে।-প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বক্তার এ কথা বলার কারণ আলোচনা করো

আমি তোমাকে মাসের মধ্যে পাঁচবার করে বই কিনে দিতে পারি নে।-প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বক্তার এ কথা বলার কারণ আলোচনা করো।

আমি তোমাকে মাসের মধ্যে পাঁচবার করে বই কিনে দিতে পারি নে
আমি তোমাকে মাসের মধ্যে পাঁচবার করে বই কিনে দিতে পারি নে

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ছুটি’ ছোটোগল্প থেকে উদ্ধৃত এই উক্তিটি ফটিকের মামির। কলকাতায় মামাবাড়িতে আসার পর চারদিকের বিরুদ্ধ পরিবেশে ফটিকের হাঁফ ছাড়বার জায়গা পর্যন্ত ছিল না। চার দেয়ালের মধ্যে আটকা পড়ে কেবলই তার সেই গ্রামের কথা মনে পড়ত, যেখানে সে মুক্ত বিহঙ্গের মতো উড়ে বেড়াত। স্কুলে তার মতো নির্বোধ এবং অমনোযোগী বালক আর ছিল না। একদিন ফটিকের স্কুলের পাঠ্যবই হারিয়ে যায়। একে তো সহজে পড়া তৈরি হয় না, তার উপর বই হারিয়ে প্রতিদিন মাস্টার তাকে অপমান ও মারধোর করতে লাগলেন। একদিন ফটিক নিতান্ত অপরাধীর মতো মামির কাছে গিয়ে বলল- “বই হারিয়ে ফেলেছি।” ফটিকের এই কথা শুনে মামি বিরক্তি প্রকাশ করে আলোচ্য মন্তব্যটি করেছেন।

মামার সঙ্গে কলকাতায় মামাবাড়ি আসার পর ফটিককে দেখে মামি খুশি হতে পারেননি। এই অনাবশ্যক পরিবারবৃদ্ধিতে তিনি বিশেষ সন্তুষ্ট ছিলেন না। তার নিজের তিনটি ছেলে নিয়ে তিনি নিজের নিয়মে ঘরকন্না করছিলেন। এর মধ্যে তেরো-চোদ্দো বছরের ফটিক প্রবেশ করলে সংসারের ছন্দ নষ্ট হয়। ফটিক স্নেহহীন মামির চোখে সর্বদা একটা দুগ্রহের মতো ছিল। মামি যদি কখনও তাকে কোনো কাজ করতে বলতেন, উৎসাহে ফটিক যতটা প্রয়োজন তার বেশি কাজ করে বসত। মামি তখন ফটিকের উৎসাহ দমন করে বলতেন- “ঢের হয়েছে, ঢের হয়েছে।”

এইভাবে ফটিকের প্রতিটি পদক্ষেপে মামির অসহযোগিতা মামাবাড়ির প্রতি ফটিকের বিরাগ বাড়িয়ে তোলে। অবশেষে স্কুলের বই হারিয়ে ফেলার পর ফটিক নিজেকে অপরাধীর মতো মনে করে। মামি ফটিকের এই একাকিত্ব ও বিরূপ পরিবেশে মানিয়ে নিতে কখনও কোনোভাবে সহায়তা করেননি। উপরন্তু বই হারিয়ে ফেলার পর তিরস্কার করে আলোচ্য মন্তব্যটি করেছেন।

আরও পড়ুন – দর্শন শব্দের অর্থ MCQ

Leave a Comment