ইটালিতে ফ্যাসিবাদের উত্থানের পটভূমি কী ছিল

ইটালিতে ফ্যাসিবাদের উত্থানের পটভূমি কী ছিল
ইটালিতে ফ্যাসিবাদের উত্থানের পটভূমি কী ছিল?
প্রথম বিশ্বযুদ্ধোত্তর কালে ইটালির সমকালীন আর্থিক ও সামাজিক সংকটের অনিবার্য ফলশ্রুতি হিসেবে ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটে। তা ছাড়া প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীতে গণতন্ত্রের মড়কের কবলে পড়ে ইটালিতে ‘ফ্যাসিবাদ’ নামক একনায়কতন্ত্র উদ্ভবের পথ পরিষ্কার হয়। মুসোলিনির হাত ধরেই ইটালিতে ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটে।

ফ্যাসিবাদ উত্থানের পটভূমি

অতৃপ্ত জাতীয়তাবাদ: প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলার সময় ইটালি মিত্রপক্ষের সঙ্গে লন্ডনের গোপন সন্ধি (১৯১৫ খ্রি:) স্বাক্ষর করে জার্মানির পক্ষ ত্যাগ করে এবং মিত্রপক্ষে যোগ দেয়। কিন্তু যুদ্ধশেষে প্যারিসের শান্তি-সম্মেলনে ইটালির আশাভঙ্গ হয়। বিজয়ী পক্ষে থাকলেও ইটালি বিজিত দেশগুলির মতোই প্যারিস শান্তি সম্মেলনের দ্বারা প্রতারিত হয়েছিল। ফলে ইটালিবাসীর আশা অপূর্ণ থেকে যায়। শীই জীতীত ছাড়াই

অর্থনৈতিক সংকট: প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাবে ইটালির সর্বস্তরের মানুষ নিদারুণ আর্থিক বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের অভাব, মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব ইটালির অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাকে জটিল করে তোলে। ফলে মানুষ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ওপর আস্থা হারায়।

বলশেভিক ভাবধারার বিস্তার: রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগে এইসময় রাশিয়ার বলশেভিক ভাবধারা ইটালিতে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ১৯২০-২১ খ্রিস্টাব্দে ইটালির প্রায় এক তৃতীয়াংশ মানুষ সাম্যবাদী আদর্শে দীক্ষিত হয়। সমাজতান্ত্রিকদের নেতিবাচক কার্যকলাপে শিল্পপতি, জমিদার, মধ্যবিত্তশ্রেণি সমাজতন্ত্রীদের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তারা একনায়কের হাতেই শাসন অর্পণ করাকেই নিরাপদ ও মঙ্গল মনে করেছেন।

অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতি : প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীতে ইটালিতে রাজনৈতিক অস্থিরতার সৃষ্টি হয়। ১৯১৯-২২ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে ইটালিতে ছয়টি মন্ত্রীসভা গঠিত হয়। কিন্তু কেউই ইটালির সমস্যার আশু সমাধান করতে পারেনি।

জাতীয় জীবনের এই সংকটময় পরিস্থিতিতে বেনিতো মুসোলিনি নামে এক নেতার আবির্ভাব ঘটে এবং শোচনীয় অভ্যন্তরীণ অবস্থার সুযোগ নিয়ে ইটালিতে ক্ষমতা দখল করেন এবং ফ্যাসিবাদী একনায়কতন্ত্রের উদ্ভব ঘটান।

Leave a Comment