উগ্র জাতীয়তাবাদী প্রচারের ক্ষেত্রে ভার্সাই সন্ধির শর্তাবলির ভূমিকা কী ছিল

উগ্র জাতীয়তাবাদী প্রচারের ক্ষেত্রে ভার্সাই সন্ধির শর্তাবলির ভূমিকা কী ছিল
উগ্র জাতীয়তাবাদী প্রচারের ক্ষেত্রে ভার্সাই সন্ধির শর্তাবলির ভূমিকা কী ছিল?

ভূমিকা

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে জার্মানিতে উগ্র জাতীয়তাবাদের সঞ্চার হয়েছিল এবং এর মূলে ছিল ভার্সাই সন্ধির কঠোরতা ও জার্মানির প্রতিশোধস্পৃহা।

ভার্সাই সন্ধির শর্ত

১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে বিজয়ী মিত্রপক্ষ এবং পরাজিত জার্মানির মধ্যে ভার্সাই-এর রাজপ্রাসাদে স্বাক্ষরিত ভার্সাই সন্ধিতে-

[১] অনুদার ব্যবহার: বিভিন্ন শর্তাবলি সম্পর্কে জার্মান প্রতিনিধিদের মতামতকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে তাঁদের এই সন্ধিতে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করা হয়েছিল। ‘ভার্সাই সন্ধি-পত্রে’ জার্মানিকে যুদ্ধের মূল অপরাধী সাব্যস্ত করে জার্মানির উপর কঠোর শর্ত আরোপ করা হয়।

[২] ভৌগোলিক শর্ত: ভার্সাই সন্ধির ভৌগোলিক শর্ত অনুসারে জার্মানি ফ্রান্সকে আলসাস ও লোরেন, বেলজিয়ামকে ইউপেন ও মেলমেডি এবং পোল্যান্ডকে পোসেন ও পশ্চিম প্রাশিয়া ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। এছাড়াও জার্মানির বিভিন্ন শহর, বন্দর, খনিজ সমৃদ্ধ অঞ্চল এবং উপনিবেশগুলি মিত্রশক্তিকে ছেড়ে দিতে জার্মানিকে বাধ্য করা হয়।

[৩] অর্থনৈতিক শর্ত: ভার্সাই সন্ধির অর্থনৈতিক শর্ত হিসেবে জার্মানিকে ৬৬০ কোটি পাউন্ড নগদ অর্থ, বহু বাণিজ্য জাহাজ এবং শিল্প ও খনিজসমৃদ্ধ সার উপত্যকা মিত্রপক্ষকে দিতে বাধ্য করা হয়।

[৪] সামরিক শর্ত : ভার্সাই সন্ধির সামরিক শর্ত অনুসারে জার্মানির জল, স্থল ও বিমানবাহিনী ভেঙে দিয়ে সামরিক দিক থেকে তাকে এমনভাবে পঙ্গু করে দেওয়া হয়, যাতে ভবিষ্যতে সে আর কোনোদিনই শক্তিশালী দেশ হয়ে উঠতে না পারে।

ভার্সাই সন্ধির শর্তাবলি জার্মান জাতির মনে প্রবল ক্ষোভ সৃষ্টি করে। এর ফলে গণতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠিত হলেও তার ভিত্তি ছিল শিথিল। ফলে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা জার্মানিতে পাকাপোক্ত হয়ে ওঠেনি।

Leave a Comment