উগ্র জাতীয়তাবাদ কীভাবে ঔপনিবেশিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপট রচনা করেছিল

উগ্র জাতীয়তাবাদ কীভাবে ঔপনিবেশিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপট রচনা করেছিল
উগ্র জাতীয়তাবাদ কীভাবে ঔপনিবেশিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপট রচনা করেছিল?

ভূমিকা

উনিশ শতকের শেষার্ধে ঔপনিবেশিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার অন্যতম কারণ ছিল বিভিন্ন দেশের অদম্য জাতীয়তাবাদী আশা-আকাঙ্ক্ষা, এরই পরিণতি হল জাতীয়তাবাদী সংঘাত। জাতীয়তাবাদী সংঘাতের মূলে ছিল দুই বিপরীত মানসিকতা; উগ্র জাতীয়তাবাদী চেতনা ও অতৃপ্ত জাতীয়তাবাদের বেদনা।

উগ্র জাতীয়তাবাদী চেতনা

[১] উগ্র জাতীয়তাবাদ: প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পূর্ববর্তী যুগের বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করলে দেখা যায় যে, উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে এই সময়ে বিভিন্ন দেশে জাতীয়তাবাদ অত্যন্ত উগ্র সংগ্রামশীল রূপ ধারণ করে। প্রত্যেক দেশের উৎকট জাতীয়তাবাদ নিজ নিজ জাতির শ্রেষ্ঠত্ব দাবি করতে থাকে এবং অন্যান্য জাতি সম্পর্কে বিদ্বেষভাব সৃষ্টি হয়।

[২ ]জার্মানিতে উগ্র জাতীয়তাবাদ: উগ্র জাতীয়তাবাদের সবচেয়ে বেশি প্রতিফলন ঘটে জার্মানিতে। কারণ জার্মানির অনেক ঐতিহাসিক, দার্শনিক ও সমাজবিদ এই ধারণা প্রচারে সক্রিয় হন। আলোচ্য সময়ে জার্মানিতে জার্মান মধ্যবিত্তশ্রেণি প্যান জার্মান লিগ, নেভি লিগ, জার্মান প্রতিরক্ষা লিগ প্রভৃতি সংগঠন গঠন করে ও বিস্তারধর্মী পররাষ্ট্রনীতির একনিষ্ঠ সমর্থক ছিল এবং তারা সম্প্রসারণের অনুকূলে জনমত গঠন করে জার্মান সংসদে চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। এর ফলে যুদ্ধের মনোভাব সৃষ্টি হয়।

[৩] ইউরোপের অন্যান্য দেশে: এই উগ্র সংকীর্ণ জাতীয়তাবোধ কেবলমাত্র জার্মানিতেই দেখা যায়নি; কম-বেশি ফ্রান্স, ইটালি, ইংল্যান্ড, রাশিয়া এবং জাপানেও তা প্রকাশ পায়। ফলে বিভিন্ন জাতির মধ্যে বিদ্বেষভাব বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং সুস্থভাবে কূটনৈতিক আদান-প্রদানের মাধ্যমে সমস্যাবলির সমাধান অসম্ভব হয়ে পড়ে।

উপসংহার

বহির্দেশে সাম্রাজ্য বিস্তারের মাধ্যমে উগ্র জাতীয়তাবাদের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল এবং এভাবেই সংঘটিত হয়েছিল জাতীয়তাবাদী সংঘাত, যা প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপট রচনায় বিশেষভাবে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিল।

Leave a Comment