উদ্দেশ্য কাকে বলে? এর বিভিন্ন অর্থগুলি কী
![]() |
উদ্দেশ্য কাকে বলে? এর বিভিন্ন অর্থগুলি কী |
উদ্দেশ্য
উদ্দেশ্য বলতে আমরা সাধারণত সেই মানসিক অবস্থাকেই বুঝে থাকি, যা আমাদেরকে কোনো কর্মে প্রবৃত্ত করে।
উদ্দেশ্য-এর বিবিধ অর্থ
উদ্দেশ্য শব্দটিকে অবশ্য বিভিন্ন নীতিবিজ্ঞানী বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে উদ্দেশ্যর চারটি অর্থ আমাদের কাছে উঠে এসেছে।
উদ্দেশ্য-র প্রথম অর্থ
হিউম, মিল এবং বেন্থাম প্রমুখ চিন্তাবিদগণ মনে করেন যে, উদ্দেশ্যর অর্থ হল আমাদের বিভিন্নপ্রকার সুখ-দুঃখের অনুভূতি। আমরা সাধারণত দুঃখকে পরিহার করে, সুখ লাভ করতে চাই। এই সুখলাভের আকুলতাই আমাদেরকে কর্মে প্রবৃত্ত করে। সুতরাং বলা যায় যে, এঁদের মতে, উদ্দেশ্য শব্দটি মূলত সুখানুভূতিকেই বোঝায়।
উদ্দশ্য-র দ্বিতীয় অর্থ
অধ্যাপক গ্রিন (T. Green) মনে করেন যে, উদ্দেশ্য-এর অর্থ হল কোনো নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তু সম্পর্কে একটি সচেতন ধারণা। এরূপ লক্ষ্যবস্তুকে লাভ করার জন্যই মানুষ কর্মে প্রবৃত্ত হয়। মার্টিনিউ (Martineu) তাঁর ‘Types of Ethical Theory’ নামক গ্রন্থে আমাদের উদ্দেশ্যগত ক্রিয়ার এক বিরাট তালিকা দিয়েছেন। সেইক্ষেত্রে তিনি উদ্দেশ্য বলতে কোথাও একটি মানসিক অবস্থাকে, আবার কোথাও কোনো ফল লাভের জন্য ক্রিয়ামনস্কতাকেই উল্লেখ করেছেন।
উদ্দেশ্য-র তৃতীয় অর্থ
অধ্যাপক ডিউই (Dewey) এবং মুরহেড (Murhead) উভয়েই উদ্দেশ্য পদটিকে যে অর্থে গ্রহণ করেছেন, তা হল, বিভিন্নরকম কামনার মধ্যে যেটিকে তৃপ্তি সাধনের জন্য নির্বাচন করা হয়, সেটিকেই বলা হয় উদ্দেশ্য। একাধিক কামনা যখন একসঙ্গে উপস্থিত হয়, তখন দেখা যায় কামনায় দ্বন্দ্ব (Conflict of desires)। কামনার মধ্যে যখন দ্বন্দ্ব দেখা যায়, তখন মন অন্য সবগুলিকে বর্জন করে একটিকে গ্রহণ করে বা নির্বাচন করে। আর তাকেই বলা হয় উদ্দেশ্য।
উদ্দেশ্য-র চতুর্থ অর্থ
উদ্দেশ্য পদটিকে একটি অত্যন্ত জটিল অর্থে উল্লেখ করেছেন অধ্যাপক হেনিন্দ্র স্টিফেন (Henry Stephen)। তাঁর মতে, [1] কোনো কিছুর অভাববোধ, অথবা [2] নির্দিষ্ট কোনো কাম্যবস্তু, অথবা [3] অভাববোধ ও কাম্যবস্তুর মিলিত সামগ্রিক মানসিক অবস্থাকেই বলা হয় উদ্দেশ্য। কারণ, অভাববোধ থেকেই আগে কাম্যবস্তুর ধারণা এবং এই কাম্যবস্তুকে লাভ করতে পারলেই অভাববোধ দূরীভূত হবে। সুতরাং বলা যায় যে, উদ্দেশ্য হল একটি জটিল মানসিক ধারণা।