![]() |
উপনিবেশের সম্প্রসারণে শিল্পবিপ্লবের ভূমিকা কী ছিল? |
ভূমিকা
শিল্পবিপ্লবের ভূমিকা
[১] কাঁচামাল সংগ্রহ: ঊনবিংশ শতাব্দীতে শিল্পবিপ্লব ও শিল্পোন্নতির ফলে ইউরোপীয় দেশগুলির মধ্যে উপনিবেশ বিস্তারের উৎসাহ দেখা যায়। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বৃহদায়তন কলকারখানা স্থাপন এবং দ্রুত উৎপাদন বৃদ্ধির ফলে কাঁচামালের প্রয়োজন বৃদ্ধি পায়। এশিয়া ও আফ্রিকাতে উপনিবেশ স্থাপনের ফলে শিল্পের এই প্রয়োজনীয় কাঁচামাল সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছিল।
[২] বাজার দখল: অর্থনৈতিক আত্মনির্ভরশীলতা অর্জন করবার জন্য ইউরোপের প্রত্যেক রাষ্ট্রই তাদের নিজেদের দেশের শিল্প বৃদ্ধির আশায় সংরক্ষণ-নীতি অনুসরণ করেছিল; স্বভাবতই ইউরোপের ভূ-খণ্ডে শিল্পজাত দ্রব্যের বাজার সংকুচিত হয়ে আসে। সুতরাং, নিজেদের দেশের শিল্পজাত পণ্য বিক্রয়ের জন্য ইউরোপের দেশগুলির বৃহত্তর বাজারের প্রয়োজন হয় এবং এই প্রয়োজনীয়তা উপনিবেশ সম্প্রসারণে সাহায্য করে।
[৩] বেকারত্ব : কলকারখানা স্থাপিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কুটির-শিল্পগুলি বিনষ্ট হয় এবং কৃষিকার্যও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা, খাদ্যসংকট ও বেকারত্বের চাপ বহির্দেশে উপনিবেশ স্থাপনের ক্ষেত্র রচনা করেছিল।
[৪] মূলধন বিনিয়োগ: শিল্পবিপ্লবের ফলে অর্থনৈতিক শোষণ তীব্রতর হয় এবং তাদের মূলধন স্ফীততর হয়ে ওঠে। এই মূলধন খাটাবার প্রয়োজনে নিত্য নতুন উপনিবেশ বিস্তারের প্রয়োজন হয়। ইউরোপের বিভিন্ন দেশের খাদ্য-সংকট সমাধানের জন্যও অন্যান্য দেশ থেকে খাদ্য সংগ্রহের প্রয়োজন দেখা দেয়। এই সমস্ত অর্থনৈতিক কারণে ইউরোপীয় উপনিবেশ স্থাপনের মাধ্যমে রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তারের জন্য বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল।
[৫] পুঁজিবাদী গোষ্ঠীর চাপ: শিল্পোন্নত দেশগুলিতে পুঁজিবাদী গোষ্ঠী নতুন নতুন শিল্পে নিজেদের পুঁজি লগ্নি করে। – অতিরিক্ত মুনাফা অর্জনের আশায় উদ্বৃত্ত পুঁজি দেশের বাইরে অন্য কোনো শিল্পে লগ্নি করার জন্য এই পুঁজিবাদী গোষ্ঠী নিজ নিজ দেশের সরকারকে উপনিবেশ দখলের জন্য চাপ দিতে থাকে। এর পরিণতি হিসেবে জন্ম হয় বিভিন্ন উপনিবেশের।