চার্বাক মতে সুখভোগকারী আত্মা কীরূপ

চার্বাক মতে সুখভোগকারী আত্মা কীরূপ
চার্বাক মতে সুখভোগকারী আত্মা কীরূপ?

চার্বাক মতে সুখভোগকারী আত্মার স্বরূপ

চার্বাক দর্শন প্রত্যক্ষ নির্ভররূপে গণ্য হওয়ায় তা মূলত অভিজ্ঞতানির্ভর। অর্থাৎ, অভিজ্ঞতার মাপকাঠিতেই তাঁরা সমস্ত কিছুরই বিচার-বিশ্লেষণ করেছেন। কারণ, অভিজ্ঞতার বিষয়গুলি হল প্রত্যক্ষ সিদ্ধ। আর চার্বাকরা প্রত্যক্ষ ছাড়া আর কোনো প্রমাণকেই স্বীকার করেন না। তাঁরা ক্ষিতি, অপ্, তেজ এবং মরুৎ-এই চারটি ভূত পদার্থ ছাড়া অন্য কোনো কিছুর অস্তিত্বকেই স্বীকার করেন না। তাঁদের মতে, শুধু এই চারটি ভূত পদার্থই হল প্রত্যক্ষযোগ্য। এগুলি ছাড়া আর কোনো কিছুই প্রত্যক্ষযোগ্য নয়। এগুলিই হল সমস্ত প্রকার জাগতিক বস্তুর মৌল উপাদান। এগুলির সংমিশ্রণেই জাগতিক বস্তুসমূহ, দেহ এবং মন প্রভৃতি উৎপন্ন হয়েছে। একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় এগুলির সংমিশ্রণের ফলেই একদিকে যেমন জগৎ উৎপন্ন হয়েছে, অপরদিকে তেমনি আবার মানুষের দেহ, মন উৎপন্ন হয়েছে। তাঁরা তাই চিরন্তন আত্মার অস্তিত্বের বিরোধী। তাঁরা বলেন, চিরন্তন বা শাশ্বত কোনো আত্মা নেই এবং সেকারণেই তা দেহের ধ্বংসের সঙ্গে সঙ্গে বিনাশপ্রাপ্ত হয়। আত্মার অস্তিত্ব তাই দেহের অস্তিত্বের সঙ্গে সহাবস্থান করে। ভূত পদার্থগুলির সংমিশ্রণের ফলে রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় দেহে চৈতন্যের আবির্ভাব ঘটে। দেহের মধ্যে সঞ্চারিত এই চৈতন্যকেই তাঁরা আত্মা (self) বলেছেন। তাঁরা তাই বলেন-চৈতন্যবিশিষ্ট দেহই হল আত্মা। এরূপ আত্মাই সুখভোগে রত। আত্মা সম্পর্কিত তাঁদের এই মতবাদ ভূতচৈতন্যবাদ নামে খ্যাত।

Leave a Comment