চিত্রশিল্পী হিসেবে গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান সংক্ষেপে আলোচনা করো

চিত্রশিল্পী হিসেবে গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান সংক্ষেপে আলোচনা করো
চিত্রশিল্পী হিসেবে গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান সংক্ষেপে আলোচনা করো।

শিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ

বাংলার শিল্পকলার ইতিহাসে ঠাকুরবাড়ির একটি বিশিষ্ট স্থান আছে। ঠাকুরবাড়ির ‘বিচিত্রা স্টুডিয়ো’ ও দক্ষিণের বারান্দার শিল্পচর্চা এককালে গোটা ভারতকে পথ দেখিয়েছিল। এই পথপ্রদর্শকদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন বিখ্যাত চিত্রশিল্পী অবনীন্দ্রনাথের সহোদর ও গুণেন্দ্রনাথের পুত্র শিল্পী গগনেন্দ্রনাথ। তিনি ছবি আঁকা শুরু করেন ভাই অবনীন্দ্রনাথ শিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার পর।

‘শিক্ষানবিশি’ পর্ব, দক্ষতা ও প্রতিভার প্রকাশ

প্রথাগত চিত্রাঙ্কন শিক্ষার পাঠ না-নিলেও তিনি প্রথমে কিছুদিন হরিচরণ বসুর কাছে এবং পরের দিকে জাপানি শিল্পী টাইকন আর হিসিদার কাছে শিল্পশিক্ষার পাঠ নেন। তাঁদের কাছে গগনেন্দ্রনাথ জাপানি কালি-তুলি আর ওয়াশের কাজ শেখেন। ১৯০১ খ্রিস্টাব্দে এই পদ্ধতিতে বারোটি কাকের ছবি নিয়ে তাঁর ‘টুয়েলভ ইংক স্কেচেস’ নামে একটি অ্যালবাম প্রকাশিত হয়। ছবিতে আলোছায়ার রহস্য বিষয়ে তাঁর দক্ষতা লক্ষ করার মতো। বাংলায় তিনিই প্রথম ছবিতে পাশ্চাত্য কিউবিজমের সার্থক প্রয়োগ ঘটান। তাঁর সবচেয়ে বড়ো পরীক্ষা ছিল, তিনি ছবিতে স্পেসকে জ্যামিতিক ধরনে ভেঙে দেখতে চেয়েছিলেন।

ব্যঙ্গচিত্রী হিসেবে স্বাতন্ত্র্য ও অন্যান্য ভূমিকা

গগনেন্দ্রনাথের প্রতিভার আর একটি বড়ো সাক্ষর ভারতীয় চিত্রকলায় কার্টুনকে প্রতিষ্ঠিত করা। ইঙ্গ-বঙ্গ সমাজ, ব্যারিস্টারদের স্বদেশিয়ানা, চরকা বনাম পৃথিবীর সভ্যতা-এসব বিষয়ে তাঁর সৃষ্ট কার্টুন ভারতীয় চিত্রকলার জগতে বিশিষ্ট স্থানের অধিকারী। তিনি যেমন ‘ইন্ডিয়ান সোসাইটি ফর ওরিয়েন্টাল আর্ট’ গঠন করেন এবং তেমনই কারুশিল্পের ব্যবহার ও প্রচারের উদ্দেশে ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে ‘বেঙ্গল হোম ইন্ড্রাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন’ প্রতিষ্ঠা করেন।

Leave a Comment