![]() |
জার্মানিতে নাতসিবাদী শক্তির উত্থান কীভাবে হয়েছিল? |
ভূমিকা
জার্মানিতে নাতসিবাদের উদ্ভব
[১] ভার্সাই চুক্তির বিরুদ্ধে অসন্তোষ: প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে বিজয়ী মিত্রপক্ষ ও পরাজিত জার্মানির মধ্যে স্বাক্ষরিত অনুদার ও একতরফা ভার্সাই চুক্তিতে জার্মানির ক্ষমতা ও মর্যাদাহানি জার্মান জাতিকে মরিয়া করে তোলে। হিটলারের নেতৃত্বে নাতসি দল দেশের এই সংকটময় পরিস্থিতিকে চতুরভাবে কাজে লাগিয়েছিল।
[২] ভাইমার প্রজাতন্ত্রের দুর্বলতা: ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে জার্মানির ভাইমার প্রজাতন্ত্রে ১৯টি মন্ত্রীসভা গঠিত হয়, কিন্তু কোনো মন্ত্রীসভাই জার্মানির বিভিন্ন সমস্যার কোনোটিরও সমাধান করতে পারেনি। এই কারণে জার্মানির জনসাধারণের একটি বড়ো অংশ গণতন্ত্র সম্পর্কে শ্রদ্ধা হারায় এবং এই পরিস্থিতিকে হিটলারের নাতসি দল চতুরভাবে কাজে লাগিয়ে নিজেদের ক্ষমতা ও শক্তিবৃদ্ধি করেছিল।
[৩] জার্মানির আর্থসামাজিক সংকট: প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে জার্মানির ভয়াবহ আর্থসামাজিক ক্ষেত্রের সংকটজনক পরিস্থিতিতে হিটলারের নেতৃত্বে নাতসি দল এই ধারণা প্রচার করতে থাকে যে-প্রজাতন্ত্রী, সমাজতন্ত্রী ও ইহুদিদের ষড়যন্ত্রের ফলেই যুদ্ধে জার্মানির পরাজয় ও অবমাননা ঘটেছে। জনগণের মধ্যে ক্রমবর্ধমান প্রজাতন্ত্র বিরোধী মনোভাবের সুযোগে হিটলারের নাতসি দল প্রভাব বৃদ্ধি করতে থাকে।
[৪] হিটলারের ব্যক্তিত্ব: অসাধারণ বাগ্মী হিটলারের নাতসিবাদে আকৃষ্ট হয়ে জার্মানির অসংখ্য মানুষ দলে দলে নাতসি দলে যোগ দেয়, ফলে নাতসি দলের সদস্য সংখ্যা লাফিয়ে বাড়তে থাকে।
[৫] হিটলারের রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল: জার্মানিতে শাসনতান্ত্রিক অচলাবস্থার সুযোগে নাতসি দল নির্বাচনে জয়লাভের মাধ্যমে ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দে জার্মানির শাসক দলের আসনে বসল। ধীরে ধীরে নিজের সুদক্ষ সংগঠনের সাহায্যে নিজের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ সমাজতন্ত্রী ও কমিউনিস্টদের নির্মমভাবে দমন করে নাতসি নায়ক হিটলার রাষ্ট্রের সব ক্ষমতা দখল করে নেন।