টীকা লেখো: টেলিগ্রাফ ব্যবস্থা

টীকা লেখো: টেলিগ্রাফ ব্যবস্থা
টীকা লেখো: টেলিগ্রাফ ব্যবস্থা।

ভূমিকা

শিল্পবিপ্লবের সম্প্রসারণে পরিবহণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ছিল এক তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা, যার একটি বিশেষ দিক ‘টেলিগ্রাফ ব্যবস্থা’ ছিল।

টেলিগ্রাফ প্রবর্তন

টেলিগ্রাফ ব্যবস্থার আবিষ্কারের প্রেক্ষাপটে দেখা যায় যে-১৮৩৭ খ্রিস্টাব্দে উইলিয়াম এফ. কুক এবং চার্লস হুইটস্টোন ইংল্যান্ডের ইউস্টন রেলস্টেশন থেকে ক্যামডেন রেলস্টেশন পর্যন্ত প্রথম টেলিগ্রাফ ব্যবস্থার সূচনা করেন।

অবশ্য ইতিপূর্বে ১৮৩২ খ্রিস্টাব্দে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্যামুয়েল মর্স ইলেকট্রোম্যাগনেটিক সিগন্যাল সহযোগে বার্তা-মুদ্রিত টেলিগ্রাফ ব্যবস্থা আবিষ্কার করেছিলেন।

টেলিগ্রাফ বিস্তার

প্রথম দিকে টেলিগ্রাফ সরকারি কাজে ব্যবহৃত হলেও ১৮৪৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে ‘কুক ও হুইটস্টোন’ তা ব্যবসায়িক ভিত্তিতে সমগ্র ইংল্যান্ডে সম্প্রসারণের ব্যবস্থা করেন। ১৮৬২ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ পৃথিবী জুড়ে ২,৪১,৫০০ কিমি এলাকা জুড়ে টেলিগ্রাফ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে লোহিত সাগরের ভেতর দিয়ে ভারতের সঙ্গে ইংল্যান্ডের সরাসরি টেলিগ্রাফ যোগাযোগ শুরু হয়। উনিশ শতকের শেষ ও বিংশ শতকের প্রথমে টেলিগ্রাফ আরও উন্নত হয় এবং যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে ওঠে।

গুরুত্ব

যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে টেলিগ্রাফ ব্যবস্থার অপরিসীম গুরুত্ব ছিল, কারণ :

[১] পরিবহণ ব্যবস্থায় ব্যবহার: রেল যোগাযোগ, জাহাজ পরিচালনা এবং ক্যানাল ও বন্দর শহরে টেলিগ্রাফ ব্যবস্থা প্রসারিত হলে আগের তুলনায় এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাত্রা অনেক সহজ ও নিরাপদ হয়ে ওঠে।

[২] সংবাদ আদানপ্রদান: দূরবর্তী স্থানের বা উপনিবেশের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন বা অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও কূটনৈতিক যোগাযোগ স্থাপন সম্ভব হয়। পণ্যসামগ্রীর আর্থিক মূল্য নির্ধারণ, নগদ পরিশোধ সহ বাণিজ্য সম্পর্কিত যাবতীয় লেনদেন আগের তুলনায় অনেক সহজ হয়।

[৩] পৃথিবীর স্নায়ুকেন্দ্র: ঔপনিবেশিক শক্তিগুলি কর্তৃক উপনিবেশগুলির সঙ্গে ব্যাবসাবাণিজ্য পরিচালনা, যুদ্ধের পূর্বে বা যুদ্ধের সময় রণকৌশল সহ সৈন্য পরিচালনা, প্রশাসনিক খবর আদান-প্রদানেও টেলিগ্রাফ খুব জরুরি হয়ে ওঠে।

Leave a Comment