অথবা, “গান যখন সাঙ্গ হয়”-তখন কী হয় তা সপ্রসঙ্গ ব্যাখ্যা করো
যখন
লেখক সৈয়দ মুজতবা আলী মনে করেন রবীন্দ্রনাথের গান অখণ্ড এবং সম্পূর্ণ। কথা ও সুরের অনিবার্যতা ও বিকল্পহীন রূপায়ণই গানগুলিকে সম্পূর্ণতা দান করে। রবীন্দ্রসংগীত শেষাবধি যে অনিবার্য, অবিকল্প, সম্পূর্ণ রূপ গ্রহণ করে তার নেপথ্যে কাজ করে কতকগুলি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়-
• শব্দের চয়ন।
• সেই শব্দগুলি বিশেষ স্থানে সংস্থাপন।
• অভাবিত কল্পনাতীত নতুন শব্দের ভিতর দিয়ে শ্রোতাকে উন্মুখ রাখা।
• ভাবে. অর্থে, মাধুর্যে পরিসমাপ্তিতে পৌঁছে দেওয়া। আর এসবের মধ্য দিয়ে যখন পরিণতিতে পৌঁছে গান সাঙ্গ হয় তখনই এ গানের অখন্ড অবিকল্প রূপ তিনি হৃদয়জাম করেন।
যা হৃদয়ঙ্গম করেন
লেখক হৃদয়ঙ্গম করেন যে, রবীন্দ্রনাথের গানটি যে রূপে সাঙ্গ হল তার আর ভিন্ন কোনো রূপ বা বিকল্প রূপ হতে পারত – না। সেটিই সর্বশ্রেষ্ঠ, যথাযথ, অতুলনীয় রূপ।
প্রাবন্ধিক মুজতবা আলী কখনোই রবীন্দ্রগানের কোনো অসম্পূর্ণতা উপলবিং করেননি আবার রবীন্দ্রসংগীত শেষ হওয়ামাত্রই যে সেটি সম্পূর্ণভাবে নিঃশেষিত হয়ে গিয়েছে তাও নয়, তার রেশ থেকে গিয়েছে। একই রবীন্দ্রসংগীত একাধিকবার, একাধিকভাবে ধরা দিয়েছে প্রাবন্ধিকের কাছে। রবীন্দ্রসংগীত-কে তাই নটরাজের আদি, অকৃত্রিম, অদ্বিতীয় মূর্তি রূপে কল্পনা করেছেন প্রাবন্ধিক। আলী সাহেবের কাছে তাঁর গুরুদেবের দেওয়া রবীন্দ্রসংগীতের কাঠামোটিই সর্বোৎকৃষ্ট এবং অপরিবর্তনীয় হয়ে থেকেছে, যা বিকল্পহীন।