নিষ্কাম কর্মের লক্ষণ কী

নিষ্কাম কর্মের লক্ষণ কী
নিষ্কাম কর্মের লক্ষণ কী

নিষ্কাম কর্মের লক্ষণ

গীতায় নিষ্কাম কর্মের চারটি মূল লক্ষণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এরূপ চারটি লক্ষণ হল যথাক্রমে-[1] শুধু কর্মেই অধিকারস্থাপন, [2] ফলাকাঙ্ক্ষা বর্জন, [3] কর্তৃত্বাভিমান ত্যাগ এবং [4] সর্বকর্ম ঈশ্বরে সমর্পণ। নিষ্কাম কর্মের এই সমস্ত লক্ষণ বা বৈশিষ্ট্যের পরিপ্রেক্ষিতেই ভগবান শ্রীকৃয়

অর্জুনকে এরূপ উপদেশই প্রদান করেছেন যে, তুমি শুধু তোমার কর্ম করো, তুমি তোমার সমস্ত কর্ম আমাতে অর্পণ করো, এবং ফলাকাঙ্ক্ষা ও মমত্ববুদ্ধি বর্জনপূর্বক উত্থিত হও। সমস্ত প্রকার হৃদয়-দৌর্বল্য পরিত্যাগ করে, যুদ্ধে অবতীর্ণ হও। কামনা-বাসনাজনিত ফলাসক্তিই আমাদের সমস্ত প্রকার অনর্থের মূল। কামনা-বাসনার বশবর্তী হয়েই মানুষ সমস্ত প্রকার পাপাচার করে। সুতরাং এগুলিই হল আমাদের প্রধান শত্রু এবং চিত্তদৌর্বল্যের কারণ। অতএব ইন্দ্রিয় সংযমপূর্বক আত্মনিষ্ঠ হও এবং পরমেশ্বর তথা ঈশ্বরে চিত্ত সমাহিত করো। এভাবেই যদি তুমি তোমাকে প্রস্তুত করতে পারো, তবেই তোমার পক্ষে নিষ্কামভাবে কর্মযোগ সাধনায় সিদ্ধিলাভ করা সম্ভব। এরূপ উপদেশই অর্জুনকে প্রদান করে ভগবান শ্রীকৃয় বলেছেন-

ক্লৈবং মাস্মগমঃ নৈতৎ তয্যুপপদ্যতে।
ক্ষুদ্রং হৃদয়দৌর্ব্বল্যং তক্তোত্তিষ্ঠ পরন্তপ।।

অথাৎ, হে পার্থ ক্লীবতাপ্রাপ্ত হয়ো না, নির্বীযের ন্যায় থেকো না। যেহেতু তুমি জ্ঞানী, সেহেতু তোমাতে রূপ বিষয়টি কখনোই শোভা পায় না। অতএব হে শত্রুমর্দন তুচ্ছ হৃদয়ের দুর্বলতা পরিত্যাগ করে উত্থিত হও এবং যুদ্ধে প্রবৃত্ত হও।

Leave a Comment