বিশ শতকে চিনে ৪ মে আন্দোলনের গুরুত্ব বা তাৎপর্য বা প্রভাব আলোচনা করো

বিশ শতকে চিনে ৪ মে আন্দোলনের গুরুত্ব বা তাৎপর্য বা প্রভাব আলোচনা করো
বিশ শতকে চিনে ৪ মে আন্দোলনের গুরুত্ব বা তাৎপর্য বা প্রভাব আলোচনা করো।

চিনে ৪ মে আন্দোলনের গুরুত্ব বা তাৎপর্য বা প্রভাব

চিনে ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের ৪ মে আন্দোলনকে কেবলমাত্র একটি রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম বললে ভুল বলা হবে, এটি ছিল গতানুগতিক সমাজ ও চিন্তার জগতে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন। এই আন্দোলনের গুরুত্ব বা তাৎপর্য বা প্রভাবগুলি হল নিম্নরূপ-

দেশাত্মবোধের উদ্ভব:
৪ মে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে চিনের জনগণের মধ্যে দেশপ্রেম, জাতীয়তাবোধ, প্রগতিশীলতার সঞ্চার ঘটেছিল। চিনের নবজাগরণের পথ হয়ে উঠেছিল প্রশস্ত। আদি কমিউনিস্টদের মধ্যে লি-তা-চাও ৪ মে আন্দোলনকে চিনে বিদেশি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দেশাত্মবোধক প্রতিরোধ বলে মনে করেছেন।

নারীদের অবস্থার উন্নতি:
এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে চিনের নারীদের অবস্থার উন্নতি হয়। নারীস্বাধীনতা, নারীশিক্ষার বিস্তার ঘটানো, নারী সচেতনতা বৃদ্ধি প্রভৃতি ৪ মে আন্দোলনের মূল কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত ছিল।

কমিউনিস্ট পার্টির উদ্ভব: ৪ মে আন্দোলনের ফলে চিনে কুয়োমিনতাং দল পুনর্গঠিত হয় এবং কমিউনিস্ট পার্টির জন্ম হয়। ক্রমশ এই পার্টি চিনের রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠতে থাকে। মে ফোর্থ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে মধ্যবিত্ত শ্রেণি ছাড়াও শ্রমিক শ্রেণি রাজনৈতিক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হতে শুরু করে।

আন্দোলনের সাফল্য :
সমাজের সকল স্তরের মানুষের অংশগ্রহণের ফলে এই আন্দোলন ব্যাপক আকার ধারণ করে এবং চিন সরকার বিক্ষোভকারীদের সামনে নতিস্বীকার করতে বাধ্য হয়। ধৃত বিক্ষোভকারীদের অনেককে মুক্তি দেওয়া হয়। সর্বোপরি, ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের ২৮ জুন ঘোষণা করা হয় যে, ভার্সাই সন্ধিতে চিনকে স্বাক্ষর করতে হবে না। 

সাংস্কৃতিক অগ্রগতি: চিনের বুদ্ধিজীবীরা ৪ মে আন্দোলনকে চিনে আধুনিকতার নতুন সূর্যোদয় বলে মনে করেন। এই সময় প্রগতিশীল পত্রপত্রিকা এবং বইপত্র প্রকাশ ছাড়াও চিনা সংস্কৃতির অগ্রগতি ঘটে। এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে চিনা জনগণ অনুভব করে যে, এগিয়ে যেতে হলে রক্ষণশীলতার বেড়া ভেঙে আধুনিক সংস্কৃতিকে স্বাগত জানানো একান্ত জরুরি।

Leave a Comment