শব্দার্থের উপাদানমূলক তত্ত্বটি উদাহরণসহ ব্যাখ্যা করো

শব্দার্থের উপাদানমূলক তত্ত্বটি উদাহরণসহ ব্যাখ্যা করো
শব্দার্থের উপাদানমূলক তত্ত্বটি উদাহরণসহ ব্যাখ্যা করো।
শব্দের অর্থকে বিশ্লেষণের ধরন অনুযায়ী শব্দার্থতত্ত্ব বিভিন্ন ধারায় বিভক্ত। এর মধ্যে অন্যতম হল শব্দার্থের উপাদানমূলক তত্ত্ব। পদার্থকে ভেঙে তার অণু-পরমাণু বিশ্লেষণ করলে যেমন পদার্থটি সম্পর্কে সম্যক ধারণা পাওয়া যায়, ঠিক তেমনি কোনো শব্দের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র উপাদানগুলিকে বিশ্লেষণ করলে সেই শব্দ ও অন্যান্য শব্দের সঙ্গে তার সম্পর্কের যথার্থ ধারণা ফুটিয়ে তোলে যে শব্দার্থতত্ত্ব, তাকেই উপাদানমূলক শব্দার্থতত্ত্ব বলে।

শব্দ হল কিছু উপাদানের সমষ্টি। এই উপাদানগুলিকে শব্দার্থ উপাদান বলা হয়। উপাদানমূলক তত্ত্বানুসারে শব্দের অর্থ নিয়ে আলোচনা করতে গেলে শব্দের অর্থকে বিশ্লেষণ করে ক্ষুদ্র উপাদানগুলিকে বের করতে হয়। এই উপাদানের ওপর ভিত্তি করে শব্দগুলিকে কিছু স্বাভাবিক শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি আরও পরিষ্কার হবে-

পুরুষ : বৃষ : মোরগ
নারী : গাভী : মুরগি
শিশু : বাছুর : মোরগছানা

এই শব্দগুলির মধ্যে নারী-শিশু, গাভী-বাছুর ও মুরগি-মোরগছানার মধ্যে অর্থগত সম্পর্ক এক। আবার পুরুষ-নারী, বৃষ-গাভী, মোরগ-মুরগি-র অর্থগত উপাদান একই। প্রথম পর্যায়টির মধ্যে অর্থ উপাদান সাধারণ পুরুষজাতীয় ও প্রাপ্তবয়স্ক এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয়টির ক্ষেত্রেও অনুরূপ মিল। শব্দার্থের উপাদানমূলক তত্ত্বের মতে এই উপাদানগুলির সমষ্টিই শব্দের অর্থ সৃষ্টি করে। এই তত্ত্বের মূল উপযোগিতা হল শব্দসমষ্টি সহজেই অর্থের ভিত্তিতে শ্রেণিভুক্ত করা যেতে পারে এবং তাদের মধ্যে অন্তর্নিহিত সাধারণ উপাদানকে শনাক্ত করা যেতে পারে।

সীমাবদ্ধতা: (১) এই তত্ত্বটি সর্বপ্রকার শব্দের অর্থের ব্যাখ্যায় সমর্থ নয়। (২) এ ছাড়া অর্থ উপাদানগুলি অনেকটাই নতুন শব্দের। (৩) বিভিন্ন ভাষা এবং সংস্কৃতির জন্য সর্বজনগ্রাহ্য উপাদান বিরল।

Leave a Comment